আজকের লেখার বিষয়টা একটু অন্যরকম। তবে যা লিখছি তা পুরোপুরি ভাবে "বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশন তৈরির পেছনের ইতিহাস , যা শিয়ালদহ থেকে শান্তিপুর লাইনের একটি রেল স্টেশন । বর্তমান ফুলিয়া স্টেশন এবং শান্তিপুর স্টেশনের মধ্যবর্তী স্টেশন।
এই লেখার পেছনে বেশিরভাগ তথ্যই দিয়েছেন "বাথনা
কৃত্তিবাস" স্টেশনের একমাত্র কর্মী সত্যপ্রিয় দাস , যিনি সর্বপ্রথম এবং
বর্তমানের টিকিট কাউন্টারে কর্মী। তিনি ছিলেন শান্তিপুর কলেজের B. Com এর
ছাত্র। আর এই "বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশন তৈরীর পিছনের এক মূল ব্যক্তিত্ব বা
আন্দোলনকারী (আবেদনকারী)।
"বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশন তৈরির পটভূমিকা
রচিত হয়েছিল ১৯৭৯ সালের এক আন্দোলনের মাধ্যমে। এই আন্দোলন শুরু করেছিল
'বাথনা রেল স্টেশন দাবি কমিটি' । তাদের পতাকার রং ছিল সাদা । তখন বাথনা
অঞ্চল ছিল বেলঘড়িয়া পঞ্চায়েত এর মধ্যে । এই কমিটির সক্রিয় কর্মী ছিলেন
মন্টু ঠাকুর (যিনি সভাপতি ছিলেন প্রবীণ হওয়ার কারণে) এছাড়াও ছিলেন গোপাল
মন্ডল , বলাই দাশ , সত্যপ্রিয় দাস সহ প্রায় 500 জন সাধারণ নাগরিক। তাদের
আন্দোলন চলেছিল প্রায় 17 বছর । তারপর M.P(Member of parliament) অসীম বালা
মহাশয়ের সহযোগিতায় ও M.L.A(Member of the legislative assembly) অজয় দে
মহাশয়ের সহায়তায় এবং D.R.M(Divisional railway manager)এর সক্রিয়তার
ফলস্বরূপ তৈরি হয় "বাথনা কৃত্তিবাস"স্টেশন। স্টেশনের ভীত ও দেওয়াল রেল
কর্তৃপক্ষ করে দিলেও তাতে মাটি ফেলার দায়িত্ব নিতে হয় অঞ্চলের
বাসিন্দাদের । তাই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই স্বেচ্ছায় শ্রম দান করে। যার
মধ্যে আমার বাবাও একজন ছিলেন। তারা সকলেই স্টেশন এর পাশের জমিতে লম্বা গর্ত
করে সেই মাটি নিয়ে স্টেশনের পাশে গিয়ে স্টেশন থেকে উঁচু করে তোলে। এই
স্টেশনে প্রথম ট্রেন থেমেছিল ১৯৯৬ সালের ১৪ ই জানুয়ারি (২৯ শে পৌষ
১৪০২বঙ্গাব্দ) । প্রথম প্রথম এই স্টেশনে চারটে ট্রেন থামতো । সকালের ছিল
দুটো ট্রেন ও বৈকালের ছিল দুটো ট্রেন। আর তৎকালীন সময় থেকেই স্টেশনের
একমাত্র কর্মী হয়ে আছেন সত্যপ্রিয় দাস মহাশয়।
নামকরণের ইতিহাস :
এই স্টেশন যেখানে তৈরি হয় বাথনার পার্শ্ববর্তী (নিকটবর্তী অঞ্চলও বলা চলে) তবে বর্তমানে যেখানে স্টেশনটি আছে তা ঘোড়ালিয়া মৌজার অভ্যন্তরে। এই স্টেশনের নাম প্রথম বাথনা রাখার পরিকল্পনা করা হলেও D.R.M office থেকে জানানো হয় যে বিহারে "Bathnaha station" নামক একটি স্টেশন আছে তাই এই নামের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না। তারপর পরিকল্পনা নেওয়া হয় বাথনা স্টেশন এর সাথে অদ্বৈত পাট এর নাম যোগ করা হবে তখন D.R.M অফিসের অফিসার মহাশয় বলেন এটা বহু বড় হয়ে যাচ্ছে তাই নামটি ছোট করতে হবে।তখন বহু ভাবনা-চিন্তার পর " বাংলা রামায়ণের রচয়িতা" কৃত্তিবাস ওঝার নামানুসারে এই স্টেশনের নাম রাখা হয় "বাথনা কৃত্তিবাস"। সত্যপ্রিয় দাসের মতামত অনুযায়ী, তারা আরেকটি নামের অনুসন্ধান করেছিল যার নাম ছিল নিউ বাথনা তবে যেহেতু তৎকালীন সময়ের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল "বাথনা কৃত্তিবাস" নামটি তাই তা আর পরিবর্তন করা হয়ে ওঠেনি।
এই স্টেশন যেখানে তৈরি হয় বাথনার পার্শ্ববর্তী (নিকটবর্তী অঞ্চলও বলা চলে) তবে বর্তমানে যেখানে স্টেশনটি আছে তা ঘোড়ালিয়া মৌজার অভ্যন্তরে। এই স্টেশনের নাম প্রথম বাথনা রাখার পরিকল্পনা করা হলেও D.R.M office থেকে জানানো হয় যে বিহারে "Bathnaha station" নামক একটি স্টেশন আছে তাই এই নামের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না। তারপর পরিকল্পনা নেওয়া হয় বাথনা স্টেশন এর সাথে অদ্বৈত পাট এর নাম যোগ করা হবে তখন D.R.M অফিসের অফিসার মহাশয় বলেন এটা বহু বড় হয়ে যাচ্ছে তাই নামটি ছোট করতে হবে।তখন বহু ভাবনা-চিন্তার পর " বাংলা রামায়ণের রচয়িতা" কৃত্তিবাস ওঝার নামানুসারে এই স্টেশনের নাম রাখা হয় "বাথনা কৃত্তিবাস"। সত্যপ্রিয় দাসের মতামত অনুযায়ী, তারা আরেকটি নামের অনুসন্ধান করেছিল যার নাম ছিল নিউ বাথনা তবে যেহেতু তৎকালীন সময়ের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল "বাথনা কৃত্তিবাস" নামটি তাই তা আর পরিবর্তন করা হয়ে ওঠেনি।
আর বর্তমানে আমরা এই
"বাথনা স্টেশনে"র দুটি প্লাটফর্মের চারিপাশে বেশ কতকগুলি গাছ লাগানোর
মাধ্যমে এই স্টেশনটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক প্রবল দাবিদার হিসেবে গড়ে
তুলতে চাইছি। বর্তমানে এই স্টেশনে প্রায় 16 টিরও বেশি ট্রেন থামে তাই এই
স্টেশনটি আমাদের এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার এক বিশেষ মাধ্যমে হয়ে
উঠেছে।
আর শেষে বলা যায় যে, স্টেশনে এখনও পর্যন্ত ""প্লাস্টিক""
ব্যবহার প্রায় হয়না ( হয়তো একটি পরিবারও একদিনে এই স্টেশনের তুলনায়
বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করে)। আর এই স্টেশন এখনো পর্যন্ত প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যে ঠাসা।
লিখছি আমিই( তুহিন শুভ্র) তবে বক্তব্য অনেকের ।
তথ্য সূত্র : সত্যপ্রিয় দাস, আঞ্চলিক বাসিন্দা ও আমার বাবা।
তুহিন শুভ্র বিশ্বাস
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।
© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি
করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা
যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা
নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।
হেব্বি লাগলো দাদা
ReplyDelete