Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Saturday 22 August 2020

মরুভূমির গোলাপ (Desart Rose)

                 জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী স্ট্রিংয়ের ‘ডেজার্ট রোজ’ গানটি হয়তো অনেকেরই শোনা। তবে শুধু এই গানেই নয়, বরং বাস্তবেও কিন্তু মরুভূমির গোলাপ বা ‘ডেজার্ট রোজ’ রয়েছে। ডেজার্ট রোজ আসলে কোনো গোলাপ ফুল নয়। মরুভূমি অঞ্চলের অনুর্বর বালুরাশি আর জিপসামের মিশ্রণে যে পাথর তৈরি হয় সে পাথরগুলো পাশাপাশি মিলে গিয়ে গোলাপের পাপড়ির আকার ধারণ করে। আর সব পাপড়ি মিলে যে আকার দাঁড়ায় তা দেখতে গোলাপ ফুলের মতো। পুরো ব্যাপারটিই ঘটে প্রাকৃতিকভাবে। এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এর পাপড়ি। যেহেতু বালিতে পাওয়া যায় তাই পাপড়িগুলোর চারপাশও বালুকাময় থাকে। বালি সরালে এর প্রকৃত সৌন্দর্য চোখে পড়ে। পাপড়িগুলো আলো প্রতিফলিত করে এবং বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব রোজ বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়।



            গোলাপের মতো দেখতে এই বস্তুটি আসলে জিপসামের তৈরী একটি প্রাকৃতিক স্ফটিক। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালির কণা নিয়ে গঠিত হয় এই মরুভূমির গোলাপ। সাইপ্রাস, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মরোক্কো, আলজেরিয়া, জর্ডান, সৌদি আরব, কাতার, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, স্পেন (ফুয়ের্তেভেন্টুরা, ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ; ক্যানেট ডি মার, কাতালোনিয়া; লা আলমারচা, কুয়েঙ্কা), মঙ্গোলিয়ায় গোলাপ শিলা পাওয়া যায় ( গোবি), জার্মানি (রোকেনবার্গ), আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (মধ্য ওকলাহোমা; কোচিস কাউন্টি, অ্যারিজোনা; টেক্সাস), মেক্সিকো (সিউদাদ জুরেজ, চিহুহুয়া), অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়াতে এই স্যান্ড রোজ দেখা যায়।

গোলাপের মতো দেখতে প্রচুর বালুকণাসমৃদ্ধ জিপসাম বা ব্যারাইটের স্ফটিকগুচ্ছের প্রচলিত নাম হল মরুগোলাপ। স্ফটিকলেখচিত্রের অক্ষের উপর সামতলিকভাবে বিস্তৃত পানপাত্রের মতো খোলামুখের চারপাশে বিকীর্ণ সামতলিক স্ফটিকগুচ্ছ এর পাঁপড়িগুলো তৈরি করেছে।  শুষ্ক বালুকণা দিয়ে স্ফটিকের কৃত্রিম গোলাপ তৈরি হওয়ার প্রবণতা দেখা যায় যেমন অগভীর লবণ উপত্যকায় বাষ্পীভবনের ফলে লবণ তৈরি হয়। স্ফটিকগুলি সামতলিক প্লেটের বৃত্তাকার বিন্যাস তৈরি করে পাহাড়টিকে গোলাপ ফুলের মতো আকৃতি দিয়েছে। জিপসাম দিয়ে তৈরি গোলাপগুলো ব্যারাইট দিয়ে তৈরি গোলাপগুলোর চেয়ে বেশি সুন্দর এবং তীক্ষ্ণধারযুক্ত। সেলেস্টাইন এবং অন্যান্য বাষ্পীভূত তীক্ষ্ণধারযুক্ত খনিজ পদার্থগুলিও এইরকম কৃত্রিম গোলাপগুচ্ছ তৈরি করতে পারে। তারা একটি অথবা একগুচ্ছ কৃত্রিম গোলাপ তৈরি করতে পারে যেগুলির অধিকাংশের ব্যাস মটরদানার ব্যাস থেকে শুরু করে চার ইঞ্চি বা ১০সেমি দৈর্ঘ্যের হতে পারে। 

             পরিবেষ্টক বালি যা স্ফটিক গঠনের সময় একত্রে মিশ্রণ দ্বারা অঙ্গীভূত হয় অথবা অন্যভাবে স্ফটিকগুলির আবরণ তৈরি করে তা স্থানীয় পরিবেশ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।এক্ষেত্রে যদি আয়রনের অক্সাইডগুলি উপস্থিত থাকে তাহলে কৃত্রিম গোলাপগুলির উপর মরচের আস্তরণ পড়ে। মরুগোলাপ বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন--বালি গোলাপ, সেলেনাইট গোলাপ, জিপসাম গোলাপ এবং ব্যারাইট গোলাপ।
 
            মরুভূমির গোলাপ গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে দেখা দেয়। বৃষ্টিপাত যখন মরুভূমিতে পড়ে তখন জল তত্ক্ষণাত বালিতে মিশে যায়। বালিতে উপস্থিত প্রচুর সংখক জিপসাম বৃষ্টির জলের দ্বারা গভীরে পৌঁছায়। তীব্র উত্তাপে, জল আবার পৃষ্ঠতলের স্তরে উঠে যায় এবং এর সম্পূর্ণ বাষ্পীভবন নতুন জিপসাম স্ফটিক গঠনের দিকে পরিচালিত করে। তখন নতুন জিপসাম স্ফটিকগুলি এক অদ্ভুত বাঁকা এবং কিছুটা বাঁকানো আকারে তৈরি হয়। স্ফটিকগুলি বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। স্ফটিকগুলির রঙ পুরোপুরি নির্ভর করে সেগুলি যে বালিতে তৈরি হয়েছে তার রঙের উপর। তিউনিসিয়ান সাহারায় সাদা মরু গোলাপ পাওয়া যায়। তবে কালো মরু গোলাপ গুলি আর্জেন্টিনার মরুভূমিতে রয়েছে।

                প্রাচীন কাল থেকেই সাহারা মরুভূমির বাসিন্দারা এই ফুলের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতেন। যাযাবররা প্রকৃতির এই অলৌকিক ঘটনাটি প্রথম লক্ষ্য করেছিলেন। তারা ধরে নিয়েছিল যে মরুভূমির গোলাপটি উটের মূত্র থেকে তৈরি হয়েছিল। সাহারার যাযাবর উপজাতিরা যখন ওসিসে পৌঁছায় এবং মানুষ ও উট তাদের তৃষ্ণা নিবারণ করে বিশ্রাম নেয় তখন উটের প্রস্রাব দ্বারা বালি ধুয়ে "মরুভূমির গোলাপ" পৃষ্ঠের উপরে উপস্থিত হয়। পুরানো দিনগুলিতে, এটি বিশ্বাস করা হত যে এই "ফুলগুলি" উটের মূত্র থেকে সঠিকভাবে গঠিত হয়েছিল।

            তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মিশর এবং আরও কিছু দেশ, যেখানে প্রচুর বালুকাময় মরুভূমি রয়েছে, সেখানে পর্যটকদের মধ্যে একটি খুব জনপ্রিয় স্যুভেনির হ'ল "মরুভূমির গোলাপ" নামক একটি অস্বাভাবিক খনিজ। খনিজটির রূপ বৈচিত্র্যই হ'ল জিপসাম। না ... সুন্দর এবং কাব্যিক নাম ছাড়া এটি কিছু নয় এটি "মরুভূমির গোলাপ"।

             অপূর্ব প্রাকৃতিক সৃষ্টি এই "মরুভূমির গোলাপ" সংগ্রাহক এবং গহনা প্রেমীদের দ্বারা অত্যন্ত মূল্যবান। ডেজার্ট রোজ গুলি সাধারণ কী রিং, স্যুভেনির, দুল এবং অন্যান্য গহনা আকারে বিক্রি হয়। কিছু কিছু দেশে ভালোবাসা দিবসের প্রেমের প্রতীক হিসাবে "মরুভূমির গোলাপ" দেওয়ার রীতি আছে। এটি একটি বিশেষ উপহার, কারণ অনেকে বিশ্বাস করেন যে এই পাথর গভীর ভালবাসার প্রতীক। আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের বাসিন্দারা একটি নির্দিষ্ট ঐতিহ্য অনুসরণ করে এবং বিয়ের দিন, কনের বাবা-মা তাকে যথাযথভাবে এই জাতীয় পাথর দেয় কারণ এটির প্রতীক গভীর ভালবাসা। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, এই অনন্য প্রাকৃতিক সৃষ্টির ব্যাপক চাহিদা সত্ত্বেও আলজেরিয়ান সরকার এর রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মরুভূমি গোলাপ বিশ্বের শুকনো অঞ্চলের বেশিরভাগের প্রতীক। অনেকের বিশ্বাস যে মরুভূমির গোলাপ পাথরের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট রয়েছে তাহল ঔষধি বৈশিষ্ট্য... ভাঙা হাড়গুলির দ্রুত নিরাময়ের জন্য মরু গোলাপ বেশ উপকারী, তবে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গের চিকিত্সা ক্ষেত্রে জিপসাম ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

             ২৫০ মিলিয়ন বছর আগে পারমিয়ান যুগে যখন  রোজ রক বা গোলাপি পাহাড়  তৈরি হয়েছিল তখন পশ্চিম এবং মধ্য ওকলাহমা অগভীর সমুদ্র দ্বারা আবৃত ছিল। এরপর সমুদ্র সরে গিয়ে জলবিহীন ব্যারাইট অধঃক্ষিপ্ত হয়ে কোয়ার্টজ বালুকণার চারধারে জমা হল। এভাবেই বিরাটাকারে তৈরি লালাভ বালিপাথরের মাধ্যমে তৈরি হল রোজ রক বা গোলাপি পাহাড়।

             পাথরের এই গোলাপ ছোট থেকে শুরু করে বিশাল আকারের হতে পারে। গোলাপ শিলাগুলির গড় আকার ০.৫  ইঞ্চি (১.৩ সেন্টিমিটার) থেকে ৪ ইঞ্চি (১০ সেমি) ব্যাসের হয়ে থাকে। ওকলাহোমা ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ কর্তৃক খুঁজে পাওয়া বৃহত্তম  গোলাপটি ছিল ১৭ ইঞ্চি (৪৩ সেমি) লম্বা এবং ১০ ইঞ্চি (২৫ সেমি) উচ্চতা, ওজন ১২৫ পাউন্ড (৫৭ কেজি)৷ তবে গোলাপ শৈলগুলি সর্বাধিক ৩৯ ইঞ্চি ( ৯৯ সেন্টিমিটার) লম্বা ও ওজনে প্রায় ৪৫৪ কিলোগ্রাম হতে পারে। এর কঠোরতা খুব কম - ২ ।আপেক্ষিক গুরুত্ব - ২.৩-২.৪ । নিখুঁত বিভাজন বৈশিষ্ট্যযুক্ত। ফ্র্যাকচারটি অসম।


            এপ্রঙ্গে জানিয়ে রাখি, কাতার শুধুমাত্র তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য সারা পৃথিবীতে পরিচিত তা নয়। কাতারের আরো একটি মূল্যবান সম্পদের নাম হচ্ছে ‘ডেজার্ট রোজ’ বা ‘মরুভূমির গোলাপ’।মরুভূমির এরকম গোলাপের আদলে একটি  জাদুঘরটি তৈরি করা হয়েছে বলে একে ‘ডেজার্ট রোজ’ বা ‘মরুভূমির গোলাপ’ বলা হয়। এই ডেজার্ট রোজের জন্যও কাতারকে আলাদাভাবে চেনে পৃথিবী।


তথ্যসূত্র: 

1. Wikipedia, 
2. roar.media, 
3. domsireni.com



লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

'ভারতের রূঢ়’ - দুর্গাপুর

                     দুর্গাপুর (প্রকারান্তরে দূর্গাপুর), ভারতের  পশ্চিমবঙ্গ  রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান  জেলার একটি শহর ও পৌর কর্পোরেশনাধীন এলাকা। এটি পশ্চিমবঙ্গের চতুর্থ বৃহৎ মহানগর বা নগরাঞ্চল। ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের মানসপুত্র বলে পরিচিত এই শহর বিশ্বখ্যাত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানাটির  জন্য। 


                দুর্গাপুর রাঢ় অঞ্চলে অবস্থিত। শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২৩.৪৮° উত্তর ৮৭.৩২° পূর্ব । সমূদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ৬৫ মিটার (২১৩ ফুট)।শহরটি দামোদর ও অজয় নদের অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত। দুর্গাপুরের দক্ষিণ সীমান্তে একদা বাংলার দুঃখ বলে পরিচিত দামোদর ও উত্তর সীমান্তে অজয় নদ প্রবাহমান। দুর্গাপুর শহরাঞ্চলের ভৌগোলিক আয়তন ১২৭.১ বর্গ কিঃমিঃ। পূর্ব-পশ্চিম দিক বরাবর (পূর্বে পানাগড় থেকে পশ্চিমে অন্ডাল পর্যন্ত) শহরের বিস্তৃতি প্রায় ৪০ কিঃমিঃ। উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর (উত্তরে শিবপুর-অজয়ঘাট থেকে দক্ষিণে ন'ডিহা পর্যন্ত) শহরের বিস্তৃতি প্রায় ২২ কিঃমিঃ। ভৌগলিক বিস্তৃতি ও আয়তনের বিচারে দুর্গাপুর শহরাঞ্চল হল পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় ও পূর্বোত্তর ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম শহরাঞ্চল।

                দুর্গাপুরের পানাগড় থেকে ক্রমশ পূর্বমুখে, ১৯ নং জাতীয় সড়ক (পুরাতন ২) ধরে বর্ধমান অভিমুখে যাত্রা করলে গাঙ্গেয় বাংলার উর্বর সমভূমি অঞ্চল পরবে যা গঙ্গা ও তার শাখানদী দ্বারা বয়ে আনা পলিমাটি দ্বারা পরিবেষ্টিত। অন্যদিকে, পশ্চিমদিকটি ছোটোনাগপুর মালভূমির পাদদেশ সন্নিবেষ্ট অঞ্চল যেখানকার মাটি তুলনামূলক ভাবে অনুর্বর, রুক্ষ, অসম ও তার রঙ হল লাল। গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলটি বহুফসলি এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ধান-উৎপাদনকারী অঞ্চল। পশ্চিমের মাটি তুলনামূলক ভাবে অনুর্বর হওয়ায়ে, অঞ্চলটি মূলতঃ একফসলি। সম্ভবতঃ এই কারণেই, এই অঞ্চলটি শিল্পপ্রধান অঞ্চল। এই শিল্পাঞ্চলটি পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহত্তম শিল্পাঞ্চল। লৌহ ইস্পাত শিল্পের কাঁচামালের সহজলভ্যতার কারণে অধিকাঅংশ ইস্পাত কারখানা দুর্গাপুরে গড়ে উঠেছে। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকালে ইস্পাত শিল্পের উন্নতি ঘটানোর জন্য একটি ব্রিটিশ কোম্পানির সাহায্যে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার দামোদর নদের তীরে দুর্গাপুরে ইস্পাত কারখানাটি [DSP]  প্রতিষ্ঠা করা হয় ।


                দুর্গাপুরে লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রিভবন এর অনুকূল ভৌগোলিক অবস্থান গুলি হল :- (১) রানিগঞ্জ, ঝরিয়ার, বোকারো, আসানসোল ও গিরিডির কয়লা  (২) সিংভূম, ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝড়, নোয়ামুণ্ডি, দুর্গ ও বাইলাডিলার উচ্চমানের  লৌহ আকরিক (৩) বীরমিত্রপুর, বোনাই, গাঅংপুর, বালাঘাট ও জব্বলপুরের চুনাপাথর, ডলোমাইট,  ম্যাঙ্গানীজ, নিকেল (৪) দামোদর, সুবর্ণরেখা, বরাকর, মহানদী, ব্রাহ্মণী নদীর জল  (৫) স্থানীয় দক্ষ শ্রমিক,  (৬) তিলাইয়া, মাইথন, পাঞ্চেত ও হীরাকুদের  জলবিদ্যুৎ এবং বোকারো, চন্দ্রপুরা ও দুর্গাপুরের তাপবিদ্যুৎ (৭) রেলপথ, সড়কপথ ও কলকাতা বন্দরের নৈকট্য (৮) দুর্গাপুর, হলদিয়া, আসানসোল, ঝরিয়া, জামশেদপুরে ইস্পাতের ব্যাপক চাহিদা (৯) সরকার, বিভিন্ন কোম্পানি, সরকারি বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও বীমা কোম্পানির মূলধন বিনিয়োগ এই অঞ্চলে লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্র স্থাপনে সাহায্য করেছে। সেকারণে দুর্গাপুরে ইস্পাত ও সংকর ইস্পাত শিল্পের পাশাপাশি অসংখ্য মিনি স্টিল প্ল্যান্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিমেন্ট ও সার শিল্পের সমাবেশ ঘটেছে।


                জার্মানির রূঢ়ের মত ভারতের দুর্গাপুর রাঢ় অঞ্চলে অবস্থিত। রূঢ় শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের নানা বিষয়ে সাদৃশ্য রয়েছে -
১) অবস্থান: ইউরোপে জার্মানির রাইন নদী ও তার দুই উপনদী রূঢ় ও লিপের সংযোগস্থলে রূঢ় শিল্পাঞ্চলের মত ভারতের দামোদর নদের তীরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে।
২) শিল্প: রূঢ় অঞ্চলের লোহা ও ইস্পাত,ইঞ্জিনিয়ারিং, রাসায়নিক শিল্প কেন্দ্রের মত দুর্গাপুরে ইস্পাত ও সংকর ইস্পাত শিল্প এবং অসংখ্য মিনি স্টিল প্ল্যান্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিমেন্ট ও সার শিল্প গড়ে উঠেছে।
৩) কয়লা: রূঢ় অঞ্চলের রাইন উপত্যকার উন্নত বিটুমিনাস কয়লার মত দুর্গাপুরে, দামোদর উপত্যকার উৎকৃষ্ট গন্ডায়ানা কয়লার  ভিত্তিতে শিল্পাঞ্চল দুটির উন্নতি ঘটে।
৪) পরিবহণ: পরিবহনের দোলক নীতি অনুসারে রাইন উপত্যকার কয়লা ভর্তি রেল ফিরতি পথে ফ্রান্সের লোরেন অঞ্চলের আকরিক লোহা আমদানি করে। একইভাবে দামোদর উপত্যকার রানিগঞ্জ ও ঝরিযারা কয়লা বোঝায় রেল ফিরতি পথে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ ও কেওনঝড়ের লোহা বহন করে আনে।
৫) জল: রূঢ়, রাইন নদীর পর্যাপ্ত মৃদু জলের মত দামোদর নদের জল দুর্গাপুর ইস্পাত শিল্পে ব্যবহৃত হয়।

                উক্ত সাদৃশ্যের কারণেই জার্মানির রূঢ় (Rhur) শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করে দুর্গাপুরকে ‘ভারতের রূঢ়’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে।


তথ্যসূত্র :

1. bengalstudents.com, 
2. https://wikipedia.org
3. আনন্দবাজার পত্রিকা, 
4. অর্থনৈতিক ভূগোল ও সম্পদ শাস্ত্রের পরিচয় - অনিশ চট্টোপাধ্যায়, 
5. উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল - অসিতেন্দু রায়চৌধুরী ও শঙ্কর হাজরা, 
6. উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল - সমরেন্দ্রনাথ মোদক।


লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলার 'হোয়াং হো' দামোদর

                    প্রকৃতি তার অপরূপ সৌন্দর্যে সাজিয়ে রেখেছে বর্ধমান জেলাকে, আর সেই সৌন্দর্যের হাতছানিতে যেখানে রয়েছে দামোদর নদের বিস্তীর্ণ বালির চর, কোথাও স্বচ্ছ নদের জল আর আশে পাশে সবুজের সমারোহ। ছোটোবেলায় পাঠ্য বইতে তাকে জেনেছিলাম “বাংলার দুঃখ” বলে।



                দামোদর নদ ভারতের ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়া একটি নদী। এই নদীগর্ভ সমৃদ্ধ সম্পদে পরিপূর্ণ, এই নদী যে বিরাট অববাহিকা তৈরি করেছে যেখানে বড় বড় খনি ও শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। আগে এই নদকে বলা হত 'বাংলার দুঃখ' (Sorrow of Bengal)। গঙ্গার শাখা হুগলীর উপনদী হল দামোদর।  ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ছোটনাগপুর মালভূমিতে, পালামৌ জেলার টোরির নিকট উচ্চগিরি শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে কলকাতার ৫০কি.মি. দক্ষিণে উলুবেড়িয়ার কাছে হুগলী নদীতে মিলিত হয়েছে। যাত্রা পথে অতিক্রম করেছে ৫৯২ কি.মি. পথ। দামোদর নদের প্রধান উপনদী গুলি হল বরাকর নদী,কোনার নদ, উশ্রী, বোকারো নদী ইত্যাদি।

                সর্পিল গতিতে বয়ে চলা দামোদরের ২৪,২৩৫ বর্গ কি.মি. বিস্তীর্ণ অববাহিকা ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পালামৌ, হাজারীবাগ, কোডার্মা, গিরিডি, ধানবাদ, বোকারো, চাতরা জেলা, এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান ও হুগলী জেলার অধিকাংশ জুড়ে বিস্তৃত। এছাড়া ঝাড়খণ্ডের পালামৌ, রাঁচি, লোহারডগা, ও দুমকা জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলা, ও হাওড়া জেলার স্বল্প কিছু অংশও দামোদর উপত্যকার অংশ। এই নদ মালভূমির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হতে হতে হঠাৎ করেই সমভুমিতে পরেছে। এই নদীর উৎপত্তি স্থল সমুদ্র সমতল থেকে ৫১০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এবং মিলনস্থল মাত্র ৩০ মিটার অবস্থিত। নদীটি যেখানে মালভুমি ছেরে সমভুমিতে প্রবেশ করেছে বর্ধমান জেলার কাছে এর উচ্চতা ১৫০ মিটার। প্রবাাহপথে ঢালের পার্থক্য নদটিকে অধীক বন্যাপ্রবন করে তুলেছে। 

                এই নদের প্রবাহ অঞ্চলের জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য বন্যার জন্য অনেকাংশে দায়ী।এই অঞ্চলের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমান ১২৫ সেমি । মুলত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বেশির ভাগ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। নিম্নগতির তুলনায় উচ্চগতিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশী। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে  জল ধরে রাখতে পারে না ফলে বন্যা  দেখা যায়। মালভুমির উচ্চভাগে বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে ভুমিক্ষয় হয় ও নদীগর্ভ ভরাট হয়ে বন্যা পরিস্থিতিকে আরও  কয়েকগুন বাড়িয়ে তোলে। এবং আসানসোলের কাছে সংকীর্ণ পথের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাবার সময় বর্ধমান সমভুমির একটা বিশাল অংশ প্লাবিত করে। প্রতি বর্ষায় দামোদরের বন্যায় দু'কূল ছাপিয়ে উঠে সবকিছু বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অনেক প্রাণ ও সম্পত্তি হানি ঘটে। প্রত্যেকবারই জনগণের জীবনে নেমে আসে  এক অবর্ণনীয় দুঃখদুদর্শা।সেই কারণে দামোদর নদকে "বাংলার দুঃখ" (sorrow of bengal) নামে আখ্যায়িত করা হয়। "চিনের দুঃখ - হুয়াংহো" এর মত ঘন ঘন বন্যার জন্য দামোদরের সঙ্গে এহেন  মিল থাকার কারনেই এমন নামকরণ।


সত্যিই কি  দামোদর আজও দুঃখের কারণ ?
 
                দামোদর যে এক সময় বাংলার দুঃখ ছিল তা সবাই জানি৷ দামোদরের বন্যার জল বাংলার মাঠ ঘাট ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, কত মানুষ গৃহ-হীণ হয়েছিল তাও জানা। ১৭৩০ , ১৮২০ , ১৮৪৮ , ১৮৫৬ , ১৮৮২ , ১৮৯৮ , ১৯০১ , ১৯২৩ , ১৯৩৫ , ১৯৪৩ , ১৯৫৮ , ১৯৭৮ এই বছরগুলিতে দামোদর তার ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়েছিল বাংলার জনজীবনে৷ এর মধ্যে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১৯৪৩ সালের বন্যাতে৷ বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনার জন্য দামোদর ফ্লাড এনকোয়ারি কমিটি বসানো হয় ১৯৪৩ সালে৷ টেনেসি ভ্যালি অথোরিটির অনুরূপে ১৯৪৮ সালের ৭ জুলাই স্বাধীন ভারতের প্রথম বহুমুখী নদী পরিকল্পনার রূপকার হিসেবে স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC) -এর জন্ম হয়। ভরদুইনের নকশা অনুযায়ী মূল প্রস্তাবে ৭টি স্টোরেজ ড্যাম ও একটা ডাইভারশন ড্যাম তৈরি করার প্রস্তাব ছিল। এই বাঁধগুলি তৈরি হওয়ার কথা ছিল তিলাইয়া, কোনার, মাইথন, পাঞ্চেত, বোকারো, আইয়ার, বলপাহাড়ি ও বেরমোতে (ডাইভারশন ড্যাম)। সেই অনুযায়ী দ্রুত নির্মীত হল তিলাইয়া (১৯৫৩), কোনার (১৯৫৫), মাইথন (১৯৫৭) ও পাঞ্চেত (১৯৫৯)— ও দুর্গাপুর ব্যারাজ। বন্যাপ্রবণ দামোদরকে বেঁধে ফেলল ডি.ভি.সি৷ দুর্গাপুর ব্যারাজের জল নিয়ন্ত্রণ করে চাষের কাজে দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল৷ ঠান্ডা ঘরে বসে নেওয়া সিদ্ধান্ত যে প্রায়শই বাস্তব থেকে দূরে অবস্থান করে তা ডি.ভি.সি হাতেনাতে প্রমাণ করে দিল৷ বর্তমান ঝাড়খণ্ডের চারটি ড্যাম আর পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দুর্গাপুর ব্যারাজের যৌথ পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হল ঠিকই কিন্ত্ত মৃত্যু হল দামোদরের৷ প্রথম আঘাতটা এল নদী গর্ভেই৷



                যদিও বর্ষার জলে পুষ্ট দামোদরে সারা বছর জল থাকার কথা নয় তবুও তিরতির করে হলেও সারা বছর একটা প্রবাহ থাকতই৷ কিন্ত্ত প্রথমেই চারটে ড্যামে জলকে বেঁধে ফেলে ও দুর্গাপুর ব্যারাজে জল আটকে সেচ খালের মাধ্যমে সেই জল পাঠানোয় নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ স্তব্ধ হয়ে গেল৷ পুরনো নদীচরের দৈর্ঘ্যে বাড়তে লাগল৷ গজিয়ে উঠতে লাগল নতুন নতুন চর৷ শুরু হল অবৈধ বালি কারবারি দের দৈরত্য, চর দখল করে গড়ে উঠল বাসস্থান। যে উদ্দেশ্যে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন মূলত তৈরি করা হয় তা ডাহা ফেল করে৷ বন্যা নিয়ন্ত্রণের বদলে ডেকে আনল বন্যাকে৷ আগে বন্যা হত প্রাকৃতিক কারণে আর এখন ম্যান মেড বন্যা৷ বন্যা নিয়ন্ত্রণে সঠিক পরিকল্পনার অভাব দামোদরকে ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছে৷ দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে চাষিদের প্রয়োজনের সময়ে জল ছাড়ার কথা ভাবা হলেও বাস্তব চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা৷ প্রতি বছর দামোদর থেকে জল ছাড়া হয় তবে   বর্ষার সময় যখন মাঠঘাট  জলে ডুবে থাকে৷ ফলে বন্যা কবলিত হচ্ছে বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা৷ 


তথ্যসূত্র: 

1. etravelguru, 
2. Quora, 
3. Wikipedia, 
4. আনন্দবাজার পত্রিকা, 
5. এইসময় ।

লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডেড ম্যানস ফিঙ্গারস' (Dead Man's Fingers)

 

                    মাঝে-মধ্যেই বিচিত্র সব ঘটনা পৃথিবীর মানুষকে বিস্মিত করে। তখন কল্পনাতেও আসে না কি রহস্য এই পৃথিবীতে লুকিয়ে রয়েছে। এমনই এক রহস্য হলো ‘ডেড ম্যানস ফিঙ্গার’।



                     মানুষের পায়ের আকৃতির মতো একটা কিছু, যার পাঁচটা আঙুল রয়েছে ও রয়েছে নখ আকৃতির বস্তু। দেখে প্রায় সবাই একমত হবে যে এগুলো আঙুল। তবে সেটা যে মানুষের পা নয়, তবে রঙটা তো মানুষ মানুষ নয় তা দেখেই বোঝা যায়। কার আঙুল এগুলো? শিম্পাঞ্জি, গোরিলা, এলিয়েন.... আসল উত্তর জানলে তাজ্জব হবেন!

                    এটি মানুষ বা কোনো পশুর পা নয়, এটি এক ধরনের ছত্রাক, যার নাম জাইলারিয়া পলিমরফা। চলতি ভাষায় একে বলা হয় মৃত মানুষের পা বা ‘ডেড ম্যানস ফিঙ্গারস' (Dead Man's Fingers) বা জাইলারিয়া পলিমোরফা (Xylaria polymorpha)।


                    জাইলারিয়া পলিমর্ফা, সাধারণত মৃত ব্যক্তির আঙ্গুল হিসাবে পরিচিত, এটি একটি স্যাপ্রোবিক ছত্রাক। এটি বন এবং কাঠের জমির একটি সাধারণ বাসিন্দা, সাধারণত পচা বা আহত গাছের স্টাম্প এবং ক্ষয়ে যাওয়া কাঠের গোড়া থেকে বেড়ে ওঠে। এটি উডি লেগিউম পোড, পেটিওলস এবং হার্বেসিয়াস স্টেমের মতো সাবস্ট্রেটগুলি উপনিবেশ স্থাপন হিসাবেও পরিচিত এটি। এর দীর্ঘায়িত সোজা, ক্লাভেট বা স্ট্র্যাপের মতো স্ট্রোমাটা আঙুলের মতো বেশিরভাগ স্থল দিয়ে পোকার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। জাইলারিয়া জেনাসে প্রায় ১০০ প্রজাতির মহাজাগতিক ছত্রাক রয়েছে। পলিমোরফা অর্থ "বহু রূপ"। এর নাম অনুসারে, এর বেশ পরিবর্তনশীল তবে প্রায়শই পোড়া কাঠের সাথে মিলিত ক্লাব-আকৃতির ফলের দেহ (স্ট্রোমা) রয়েছে। বসন্তকালে এই ছত্রাকটি প্রায়শই কনিডিয়া নামক সাদা বা নীল বর্ণযুক্ত স্পোরের স্তর তৈরি করে যা এর পৃষ্ঠ এবং আশেপাশের অঞ্চলে বৃদ্ধি পায়।

                সায়েন্স ফ্রাইডের মতে, ছত্রাকটার এমন ভুতুড়ে নাম কারণ এক ঝটকায় দেখে মনে হচ্ছে যেন জঙ্গলের মধ্যে পাথরের ফাঁক দিয়ে মানুষের আঙুল বেরিয়ে রয়েছে। ডেড ম্যানস ফিঙ্গার সাধারণত দুই থেকে পাঁচটি শাখা একসঙ্গে ক্লাস্টার করে বৃদ্ধি পায়। বন এবং কাঠের অঞ্চলে এটি পাওয়া যায়। এটি সাধারণত ক্ষয়ে যাওয়া কাঠ এবং পচা গাছের কাণ্ড থেকে বৃদ্ধি পায়।


তথ্যসূত্র:

1. Wikipedia, 
2. ndtv, 
3. kolkata24x7,
4. dainikamadershomoy,  
5. thedhakatimes.



লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।