নিম্নচাপ (Depression) যদি কোন এলাকায় চারপাশের তুলনায় বায়ুর চাপ কম থাকে, তবে সে অবস্থাকে বলা হয় নিম্নচাপ।
নিম্নচাপ সচরাচর ভারত মহাসাগরের গভীর এলাকায় অথবা বঙ্গোপসাগরে উৎপন্ন হয়ে থাকে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সময়ে এই নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।
যখন কোনো স্থানে সূর্য খাড়া ভাবে কিরণ দেয় তখন ঐ স্থানের বাতাস গরম হয়ে উপরে উঠে যায়। তখন ঐ অঞ্চলে বাতাসের ঘনত্ব কমে যায়। আর ঘনত্ব কমে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায়। অর্থাৎ নিম্ন চাপের সৃষ্টি হয়। আর যখন বাতাসের চাপ কমে যায় তখন বাষ্পীভবনের হার বেড়ে যায়। ফলে প্রচুর জলীয়বাষ্প তৈরি হয়। এ জলীয়বাষ্প থেকে মেঘ তৈরি হয় যা বাতাসের সাথে ভেসে গিয়ে কোনো পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে বৃষ্টির সূচনা করে।
নিম্নচাপ ক্ষেত্র সম্বন্ধে বুঝতে গেলে আগে বুঝতে হবে বায়ুর চাপ কি? আমাদের বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে আবহাওয়া মন্ডল।প্রতি বর্গ সেঃমিঃ ওপর এই বায়ুমন্ডলের ওজনই হলো বায়ুর চাপ। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষনজনিত ত্বরন,যাকে বলা টান বা আর্কষন,যা সেঃমিঃ,মিঃ,ও কিঃমিঃ যেমন দূরত্তের একক তেমনি বায়ুর চাপের একক হলো ডাইনস প্রতি বর্গ সেঃমিঃ (Dynes/Square cm)।ভূ-পৃষ্ঠে সমুদ্রতলে প্রতি বর্গ সেঃমিঃওপর এই চাপ সাধারন অবস্থায় থাকে 1,013200x106 ডাইনস।
এখন এই 106 ডাইনসকে যদি নতুন নাম দিয়ে বলা হয় এক বার,তাহলে সাধারন অবস্থায় বায়ুর চাপ দাড়ালো 1,0132 বার(এক বারের হাজার ভাগের নাম মিলিবার (Milibar)।বায়ুর চাপ প্রকাশ করা হয় এই মিলিবার এককে।সুতরাং সাধারন অবস্থায় এই চাপ দাড়ালো1,0132 মিলিবার।নিম্নচাপ ক্ষেত্র যখন সৃস্টি হয় তখন সেই অঞ্চলের বায়ুর চাপ আশেপাশের বায়ুর চাপ থাকে 2-4 মিলিবারের মত কম থাকে।যদি বায়ুর চাপ আরও কমে 4-6 মিলিবারের তফাৎ ঘটায় সেই নিম্নচাপ ক্ষেত্রকে ডিপ্রেসান (Depression) বলে।এই ডিপ্রেসান গভীর হলে সেই অঞ্চলের বায়ূর চাপ আশেপাশের বায়ূর চাপের চেয়ে 6-8 মিলিবার কম হয়।যদি এই বায়ূর চাপ আরো কমে নিকটবর্তী অঞ্চল থেকে 8 মিলিবারের চেয়েও কম হয়,তখন থাকে বলা হয় সাইক্লোন ঝড় (Cyclonic Storm)।
No comments:
Post a Comment