Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Friday, 11 March 2022

না ফেরার হ্রদ : নাউং ইয়াং (Naung Yang)

 ভারতের অরুণাচল প্রদেশের চ্যাংলাং জেলার গা-ঘেঁষা মায়ানমারের নাউং ইয়াং (Naung Yang) হ্রদ ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে হাজারো গল্পকথা। যদিও অনেকেই তা গল্পকথা বলে বিশ্বাস করেন না। এ হ্রদের কাছেপিঠে গেলেই নাকি ‘হারিয়ে যান’ সকলে। সেখান থেকে নাকি আজ পর্যন্ত ঘরে ফিরে আসতে পারেননি কেউ! এই হ্রদকে নিয়েও শোনা যায় বহু লোককথা। রহস্যজনক ভাবে নাকি সেখানে হারিয়ে গিয়েছেন অগণিত মানুষ। হ্রদের ‘ফাঁদে’ পড়ে কেউ ফিরে আসেননি। তাই এই হ্রদটি লেক অফ নো রিটার্ন (Lake of No Return) নামে পরিচিত। অরুণাচল প্রদেশের পাংসাউ পাসের নিকট অবস্থিত নাউং ইয়াং হ্রদটি সর্বাধিক ১.৪ কিমি লম্বা এবং সর্বাধিক ০.৮০ কিমি চওড়া। এই হ্রদ সংলগ্ন অঞ্চলে টাংসা উপজাতির লোক বসবাস করেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৬৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এই হ্রদের নামের সঙ্গে কী কী কারণে রহস্যের উপাদান জুড়ে গিয়েছে? তা নিয়ে বিস্তর গল্পকথা ছড়িয়ে রয়েছে। যার শুরুটা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে।



অনেকে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রশক্তির বহু দেশই জরুরি ভিত্তিতে বিমান অবতরণ জন্য অরুণাচলের গা-ঘেঁষা এই হ্রদের আশপাশের জায়গা ব্যবহার করত। তবে অবতরণের পর সে সব বিমানের কেউ আর নাকি ফিরে আসেননি। আর একটি জনশ্রুতিতে দাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে এক দল জাপানি সেনা দেশে ফিরতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। ঘুরতে ঘুরতে কোনও ভাবে তাঁরা এই হ্রদের কাছে চলে গিয়েছিলেন। সে সময় তাঁরা সকলেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। নাউং ইয়াং হ্রদের কাছ থেকে আক্রান্তদের কেউ আর দেশে ফিরতে পারেননি। সেখানেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল। নাউং ইয়াং হ্রদ ঘিরে আরও রহস্যজনক গল্পকথা ছড়িয়ে রয়েছে। যুক্তিবাদীদের কাছে গল্পকথা হলেও স্থানীয়দের অনেকেই তা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। এমনই এক দাবি করেছেন স্টিভেন এম কলিন্স নামে লেখক। ‘দ্য “লস্ট” টেন ট্রাইবস অব ইজরায়েল…ফাউন্ড!’ বইয়ে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত ঈশ্বরের অনুশাসনপ্রাপ্ত যে দশটি জনগোষ্ঠীগুলির খোঁজ মেলে না, তাদের বিষয়ে সবিস্তার লিখেছেন স্টিভেন। তাঁর দাবি, ওই জনগোষ্ঠীর একটি এখনও এই হ্রদ এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে। যদিও এই দাবি কতটা যুক্তিগ্রাহ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

অরুণাচলের এই হ্রদ নিয়ে এ রকম অগুনতি জনশ্রুতি ছড়িয়ে রয়েছে। তারই একটি হল হ্রদের মাছ নিয়ে। নাউং ইয়াং এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বহুকাল আগে এখানকার এক গ্রামবাসী এই হ্রদ থেকে একটি বিশালাকায় মাছ ধরেছিলেন। গোটা গ্রামের বাসিন্দাদের তা রেঁধে খাওয়াতে এলাহি ভোজের আয়োজন করেছিলেন তিনি। তবে নিমন্ত্রিতদের তালিকায় নাম থাকলেও ভোজে যাননি গ্রামের এক বৃদ্ধা ও তাঁর নাতনি। তাতে রেগেমেগে নাতনি-সহ ওই বৃদ্ধাকে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন গ্রামের কর্তাগোছের এক বাসিন্দা, যিনি নিজেকে হ্রদের রক্ষাকর্তা বলে জাহির করতেন। পরের দিন নাকি হ্রদের জলে ডুবে যায় গোটা গ্রাম! নাউং ইয়াং হ্রদ ঘিরে এমন বহু ভীতিপ্রদ লোককথা ছড়িয়ে থাকলেও পর্যটকদের কাছে এর আকর্ষণে বিন্দুমাত্র কমেনি। অরুণাচল প্রদেশর চ্যাংলাং জেলার পর্যটন মানচিত্রেও ঠাঁই পেয়েছে এই হ্রদ।

তথ্যসূত্রঃ-

1. Wikipedia

2. আনন্দবাজার পত্রিকা

No comments:

Post a Comment