আপনারা কি জানেন, সেই কর্কটক্রান্তি রেখার সূচক খুঁটির অবস্থান প্রতিবছর পরিবর্তন ঘটছে।
আমরা যদি আজ সেই খুঁটি দেখে আসি তাহলে আমরা যে স্থানে দেখব, পরের বছর দেখব সেই স্থানে আর নেই, একটু সরে গেছে। অনেক সময় ভূগোলের ছাত্রছাত্রী সেখানে গিয়ে GPS গ্রাহক যন্ত্রের সাহায্যে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ মেপে আবার সঠিক জায়গায় খুঁটিটি পুঁতে দিচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল – কেন খুঁটিটির অবস্থান পরিবর্তন ঘটছে ?
আসলে প্রতিবছর কর্কটক্রান্তি রেখা একটু একটু করে সরে যাচ্ছে। পৃথিবী তার উল্লম্বরেখা অর্থাৎ অক্ষের সাথে সাড়ে তেইশ ডিগ্রি কোণে অবস্থান করে। আসলে এটি গড় অবস্থান। একচল্লিশ হাজার বছর অন্তর এটি ২২.১-২৪.৫ ডিগ্রি ব্যবধানে থাকে।
পৃথিবীর উল্লম্বরেখার পরিবর্তন হয় বলেই কর্কটক্রান্তি, মকরক্রান্তি, সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত রেখা একটু একটু করে সরে যায়।
২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ রেখাটিকে কর্কটক্রান্তি রেখা বলা হলেও লম্ব আলোকপাতে আসল অবস্থান নির্ভর করে পৃথিবীর হেলে থাকার কৌণিক পরিমাণের উপর। আর সেই কোণটি প্রতি ৪১,০০০ বছরের একটি চক্রাকার পর্যায়ক্রমে ২১.৫ থেকে ২৪.৫ ডিগ্রীর মধ্যে বদলাতে থাকে। সেই হিসাবে বর্তমান পর্যায়ে কর্কটক্রান্তি রেখার অবস্থান প্রতি বছর আধ সেকেন্ড করে কমে আসছে। এছাড়া ধীর পরিবর্তন ছাড়াও আহ্নিক অক্ষটি ঘুর্ণনরত লাট্টুর মতই স্থায়ী না থেকে প্রিসেশন নামে একটি বলয়াকার গতি এবং ন্যুটেশন নামে একটি দোদুল্যমান গতি পরিদর্শন করে। ন্যুটেশনের পর্যায়কাল পৃথিবীর ক্ষেত্রে ১৮.৬ বছর এবং কৌণিক পরিমাণ প্রায় সাড়ে নয় সেকেন্ড। রেখাটি নির্দিষ্ট নয় এবং এটি প্রত্যেক বছর ১৫ মিটার(০.৪৮৬″) করে দক্ষিণদিকে সরে যাচ্ছে। রেখাটি ১৯১৭ সালে ছিল ২৩°২৭′ এবং ২০৪৫ সালে ২৩°২৬'অক্ষাংশে পৌঁছাবে।
No comments:
Post a Comment