Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Saturday, 6 August 2022

হেঁটে চলে বেড়ানো গাছ 'ক্যাশাপোনা' (Cashapona)


আমরা সবাই জীবনবিজ্ঞানে উদ্ভিদ ও প্রাণীর পার্থক্য পড়েছি। আমরা জানি, উদ্ভিদ স্বেচ্ছায় স্থান পরিবর্তন করতে পারে না, কিন্তু প্রাণী গমনে সক্ষম। অর্থাৎ গাছ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিজের ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াতে পারে না। কিন্তু এমন এক গাছ রয়েছে, যে কি না লম্বা লম্বা ‘পা’ ফেলে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়। শুনে অবাক লাগছে নিশ্চয়ই! মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার গভীর নিরক্ষীয় বৃষ্টি অরণ্যে এমনই এক গাছ রয়েছে। নাম ক্যাশাপোনা (Cashapona), যা চলমান পাম (Walking Palm) নামেও পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম Socratea exorrhiza।



 ক্যাশাপোনা পাম গোত্রেরই গাছ। এই গাছের উচ্চতা হয় প্রায় ১৬-২০ মিটার এবং ব্যাস ১২-১৬ সেমি। এবার জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে স্থান পরিবর্তন করে এই গাছ? ক্যাশাপোনা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছেন স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এক উদ্ভিদবিজ্ঞানী, ব্রাতিস্লাভার স্লোভাক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এর প্যালিওবোটানিস্ট পিটার ভ্র্যানস্কি। জীবাশ্ম থেকে প্রাচীন গাছপালার নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডরের ওই গভীর জঙ্গলে পৌঁছে গিয়েছিলেন এই বিজ্ঞানী। সেখানেই ক্যাশাপোনার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। উদ্ভিদ হয়েও কেন জায়গা পরিবর্তন করে, তা খতিয়ে দেখেছেন পিটার। তিনি জানিয়েছেন, এই বনাঞ্চলে ভূমিক্ষয় হয় বেশি। এর জেরে অনেক সময় গাছের শিকড়ের পাশ থেকে মাটি সরে যায়। ফলে নড়বড়ে হয়ে যায় গাছের ভিতও। টিকে থাকতে সেই সময় দরকার হয় শক্ত মাটির। তাই তড়িঘড়ি ক্যাশাপোনা গাছগুলি ঠেসমূলের মতো নতুন শিকড় তৈরি করে। সেই নতুন শিকড় শক্ত মাটিতে ক্রমশ গেঁথে যেতে থাকে। অন্যদিকে পুরনো শিকড়গুলো ধীরে ধীরে মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এভাবে গাছটি নিজের পুরনো অবস্থান থেকে খানিকটা সরে যায়। বিশেষ প্রকার ঠেসমূল বা ‘স্টিল রুট’ দিয়ে তাদের এই আনাগোনাকে অনেকেই মানুষের ‘হাঁটা’র সঙ্গে তুলনা করছেন। এভাবে কখনও কখনও নিজের অবস্থান থেকে দিনে দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার পর্যন্ত সরে সরে যায় গাছগুলি। পিটার জানিয়েছেন, এভাবে পুরোপুরি জায়গা বদল করতে একটি গাছের প্রায় দু’বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়। কখনও কখনও নিজের প্রথম অবস্থান থেকে প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত সরে যেতে দেখা যায় গাছগুলিকে। শুধু তাই নয়, পড়শি কোনও গাছ গায়ে ঢলে পড়াও একেব্বারে না-পসন্দ ক্যাশাপোনার। সেক্ষেত্রে ঝুট-ঝামেলায় না গিয়ে চুপচাপ গুটিগুটি পায়ে স্থান বদল করে পাম গোত্রের এই গাছ। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে গাড়িতে ঘণ্টা তিনেকের পথ। তারপরই শুরু জঙ্গলের রাস্তা। বেশ কয়েকঘণ্টার দুর্গম পথ পেরিয়ে গেলেই মিলবে সুমাকো বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। সেখানেই রয়েছে আজব এই গাছ।

তথ্যসূত্রঃ- বর্তমান পত্রিকা

No comments:

Post a Comment