প্রতিটি প্রাণীর যেমন চোখ রয়েছে। সেই চোখ দিয়ে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করেন। চোখ হল এমন একটি অংশ যার মাধ্যমে প্রাণীজগতের জীবনযাপন হয়। তবে জানেন কী পৃথিবীর একটি চোখ রয়েছে। পৃথিবীর চোখ!! পৃথিবী দেখতে না পেলেও পৃথিবীর চোখ (eye of earth) কিন্তু ঠিকই রয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। কোথায় রয়েছে এই চোখ।
'পৃথিবীর চোখ' ('The Eye of the Earth') ক্রোয়েশিয়ার একটি অসাধারণ সুন্দর প্রাকৃতিক প্রস্রবণ। নীল এবং সবুজ রঙের বিভিন্ন শেডের চোখের মণির সঙ্গে অত্যন্ত সাদৃশ্য থাকার কারণে এই প্রস্রবণটি-কে 'পৃথিবীর চোখ' বলা হয়। প্রথম দেখায় নীল রঙের দানবীয় চোখ মনে হতে পারে!! কিন্তু এটি মূলত একটি নদী! ক্রোয়েশিয়ার দালমাটিয়া অঞ্চলে ইজবোর সেটিন (Izvor Cetine) নামক নদী দেখতে হুবুহু চোখের মত। "ইজবোর সেটিন" ক্রোয়েশিয়ান শব্দের অর্থ সেটিনা নদীর উৎস (Source of Cetina)। ইজবোর সেটিন নদীর পানি খুবই ঠান্ডা (৪ ডিগ্রী থেকে ৭ ডিগ্রী )। এমন কি গ্রীষ্মকালেও এর পানি গরম হয় না। নদীটির গভীরতা প্রায় ৫০০ফু। সুউচ্চ দিনারা পর্বতের নীচে প্রবাহিত এই নদীকে ড্রাগনের চোখও বলা হয়। এই প্রস্রবণটি ইউরোপের ডালমাসিয়া (Dalmatia) অঞ্চলের দীর্ঘতম নদী সেটিনার উৎসস্থল। এই নদীটি (সেটিনা) অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে প্রবেশের আগে প্রায় ৬৫ মাইল পথ অতিক্রম করেছে। নদীটি ক্রোয়েশিয়ার সর্বোচ্চ পর্বতমালা দিনারার পাদদেশ দিয়ে বয়ে চলেছে।
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ এই পৃথিবীর চোখ!! পৃথিবীর এই চোখ দেখতে সারাবছরই এখানে ভিড় জমান পর্যটকরা। শুধু তাই নয়, যারা সাঁতারে দক্ষ তারা পৃথিবীর চোখে নেমে স্নানও করে নিতে পারেন। তবে স্নান করার জন্য এখানে পর্যটকরা চোখের উপরেই সাঁতার কাটেন। এর মাঝখানে একটি গভীর অংশ রয়েছে সেখানে যাওয়ার সাহস কিন্তু মানুষ খুব একটা দেখান না।
এর পাশেই রয়েছে একটি ছোটো গ্রাম। রয়েছে একটি বিখ্যাত চার্চ। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন নয়ের দশকে এই চার্চটি তৈরি হয়েছিল। স্থানীয় প্রবাদ অনুসারে এই চার্চ নাকি রক্ষা করে পৃথিবীর এই চোখকে। তাই যদি মনে করেন পৃথিবীর চোখ দেখতে যাবেন তাহলে এখানে যাওয়া যেতেই পারে। তবে এটা মনে রাখবেন পৃথিবীর চোখ বলে কথা, কোনও আঁচড় যেন না লাগে। তাহলেই কিন্তু সর্বনাশ।
তথ্যসূত্র: ১. আজকাল পত্রিকা, ২. Quora
No comments:
Post a Comment