Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Thursday, 23 July 2020

দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (২৫ জুন ১৯৩৪ - ২ জুন ২০১১)


        দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুন। পিতার নাম নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতা নীহারবালা। 

        সাত বৎসর বয়সে কলকাতায় চলে আসেন স্কুলের পড়াশোনার পর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। কিন্তু সংসারের অর্থকষ্ট মেটাতে তিনি বন্ধ করেছিলেন পড়াশুনা। তাতে বিষম চটে গিয়েছিলেন তাঁর পিতা। তিনি তখনই তাঁর সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করেন। কলকাতায় ঘরছাড়া হয়ে উঠলেন হ্যারিসন রোডের একটি মেসে। ওই মেসে তখন থাকতেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। রোজগারের জন্য তখন যা পেতেন তাই করতেন। কখনো গৃহশিক্ষকতা, টাইপিস্ট স্টোরকিপার এবং চায়ের দোকানেও কাজ করতে হয়েছে। অর্থকষ্ট এতটাই ভয়াবহ ছিল। কিন্তু এসবের মধ্যেও সৃজনী মনটা কিন্তু উধাও হয়ে যায় নি। সময় পেলেই শুনতেন জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ও বাচনভঙ্গি। তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন কাজী সব্যসাচী  আবৃত্তিচর্চার সূত্রপাত তখনই। সারাদিন চায়ের দোকানে কাজ করতেন, রাতে ফিরে কলম-খাতা নিয়ে বসে যেতেন , কবিতাও লিখতেন। এমনই একটা সময় সঙ্গীত পরিচালক সুধীন দাশগুপ্ত  এবং সুবীর হাজরার (সত্যজিৎ রায়ের সহকারী) একটি ছবিতেও প্রোডাকশনের কাজ করেছিলেন তিনি। যদিও সে ছবি মুক্তি পায়নি। সুধীন দাশগুপ্তই তাঁকে আকাশবাণীর  ‘অনুষ্ঠান ঘোষক’-এর পদে চাকরির পরীক্ষা দিতে বলেন। অতঃপর ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঘোষক হিসাবে আকাশবাণীর চাকরিতে প্রবেশ করেন। তারপর একটানা বত্রিশ বছর আকাশবাণীতে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন। অচিরেই কুশলতায় হয়ে ওঠেন আকাশবাণীর সংবাদ ও ভাষ্যপাঠক। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি দিল্লীতে বাংলা বিভাগে সংবাদ পাঠক রূপে নির্বাচিত হন। তারপর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শেষদিকে ফিরে আসেন কলকাতার বেতার কেন্দ্রে। তাঁর কণ্ঠে ' কলকাতার আকাশবাণীতে '‘আকাশবাণী কলকাতা, খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’'—ভরাট কণ্ঠের এই সম্ভাষণ যে কি প্রভাবে মানুষকে আচ্ছন্ন করত তা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। আর সংবাদ পাঠকে তিনি এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে, ঘরে ঘরে সংবাদ পরিক্রমা শোনার জন্য রেডিও খোলা হতো। তাঁর অনেক আবৃত্তি প্রকাশ পেয়েছে রেকর্ড ও ক্যাসেটে। 

        বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রণবেশ সেনের লেখা 'সংবাদ পরিক্রমা' তাঁর ভাবগম্ভীর কণ্ঠে শোনার জন্য অপেক্ষা করে থাকত দুই বাংলার মানুষ। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তা প্রেরণার কাজ করত।
তাঁর এই ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ গঠিত হওয়ার পর তিনি ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ১০ ই জানুয়ারি বাংলাদেশে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন ও সংবর্ধনা জানান।

        বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে "পদ্মশ্রী" সম্মানে ভূষিত করে।

        আকাশবাণী কলকাতার বেতার কেন্দ্র হতে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে অবসরের পর যৌথ বা একক ভাবে সম্পাদনা করেছেন বিভিন্ন বিষয়ের বই। সেগুলি হল- আবৃত্তি, বাংলাদেশের গল্প, একাত্তরের যুদ্ধে ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশ প্রভৃতি।

        তাঁর স্ত্রী ছিলেন কত্থক নৃত্যশিল্পী রুবি বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে শুরু করেছিলেন 'রসকলি' নামে একটি আবৃত্তি ও নৃত্যচর্চা কেন্দ্র। কিন্তু ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁর স্ত্রীর অকাল প্রয়াণে প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে হঠাৎ সব কিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন অসুস্থ হয়ে স্মৃতিভংশ হয়েছিল তাঁর। দক্ষিণ কলকাতার ল্যাসডাউনে নিজের বাসভবনে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২ রা জুন ৭৭ বৎসর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র: www.wikipedia.org

©
GEO HUB
(Enhance Your Geo Knowledge)
Ghoralia, Santipur, Nadia.
..............................
GEO HUB এর লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

No comments:

Post a Comment