ভারতের সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে অন্যতম পুদুচেরি। ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এর নতুন নামকরণ হয়েছিল 'পুদুচেরি'। প্রায় ৭১১,৯৩৪ জনসংখ্যা সহ এই ৪৯২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার পুদুচেরি ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি আধুনিক শহর। শহরটি 'পন্ডি' (Pondi) নামেও পরিচিত। এ যেন ভারতে বিদ্যমান ফ্রান্সের একটি অংশ। আর এই শহরকেই বলা হয় প্রাচ্যের প্যারিস।
'পুদুচেরি' শব্দের তামিল অনুবাদের অর্থ 'নিউ টাউন' বা নতুন নগর। এই নাম রেখেছিলেন ফরাসি তামিলিয়ানরা।অতীতে ফরাসিদের উপনিবেশ থাকায় পুদুচেরিতে তার রেশ আজও রয়ে গেছে।
ফ্রান্সের প্যারিস ভ্রমণের স্বপ্ন সবার মনেই থাকে। বেশিরভাগ মানুষ ছুটেন সেখানে প্যারিসের বিভিন্ন স্থাপনা এমনকি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মুগ্ধ করে সবাইকে। তবে প্যারিস ভ্রমণ তো আর মুখের কথা নয়। আপনি যদি প্যারিস ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন তাহলে ঘুরে আসতেই পারেন ভারতের ‘প্রাচ্যের প্যারিস থেকে’। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হই চই করতে যেমন ভালো লাগে, তেমনই তাঁদের সঙ্গে নিরিবিলিতে সময় কাটাতেও ভালো লাগে। আর তার জন্য আদর্শ জায়গা পুদুচেরি। শীতকালে এখানকার আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম থাকে। পুদুচেরিতে ফরাসি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপস্থিত অত্যন্ত প্রকট। পুদুচেরি যেন ফ্রান্সের একটি অংশ। এখানকার ফ্রেঞ্চ কলোনিগুলিতে গেলে মনে হবে যেন প্যারিসের অলিগলিতে ঘুরছেন। সেই কারণেই পুদুচেরিকে বলা হয় 'প্রাচ্যের প্যারিস'।
পুদুচেরি ভ্রমণে যা যা দেখবেন
সমুদ্র সৈকত
পুদুচেরির সমুদ্র সৈকত দারুণ সুন্দর। সেখানকার সরকারি ভবনগুলোর বেশিরভাগই সমুদ্রের ধারে অবস্থিত। সৈকতসংলগ্ন রাস্তাগুলোও অত্যন্ত পরিষ্কার। চাইলে আপনি খালি পায়েও হাঁটতে পারবেন। এই অঞ্চলের চারপাশে ১০টিরও বেশি সৈকত আছে। তবে সার্ফিংয়ের জন্য অরোভিল বিচ জনপ্রিয়। ব্যাক ওয়াটার বোটিং উপভোগ করারও দারুণ জায়গা প্যারাডাইস বিচ।যোগাসনের জন্য শান্তিপূর্ণ জায়গা পেতে চাইলে যেতে পারেন প্রমেনেড বিচে। সান বাথ ও মাছ ধরার জন্য বিখ্যাত মাহে বিচ। ক্যানোয়িংয়ের জন্য আদর্শ কারাইকাল সমুদ্র সৈকত।
ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টার
ইন্দো-ফরাসি নিদর্শনের সেরা উদাহরণ হলো ফ্রেঞ্চ কলোনির ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টার্স ও সেখানকার রাস্তাগুলো। ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারগুলো হোয়াইট টাউন নামে পরিচিত।ক্যাথেড্রালের ঐতিহ্য ও স্থাপত্য অনুসারে ফ্রেঞ্চ ভিলাগুলো ধূসর, সাদা, পিচ ও হলুদ রঙে রাঙা। সেখানকার ভারতি পার্ক, অরবিন্দ আশ্রম, লা মেসন রোজ, কিউরিও সেন্টার ও নটরডেম অ্যাঞ্জেস ঘুরে দেখতে দারুণ লাগে।
অরোভিল কমিউন
পুদুচেরি ভ্রমণে যাবেন অথচ অরোভিলে যাবেন না, তা কি হয়! সেখানকার উন্নতমানের অ্যাসেনশিয়াল অয়েল, ধূপকাঠি ও সূক্ষ্ম হস্তশিল্প বিখ্যাত। এছাড়া লাল বালির পাথরের অ্যাম্ফিথিয়েটারের নাম মাতৃমন্দির, বুটিক ডি অরোভিল, মন্ত্র পটারি, লা ফার্ম চিজ ও অরোভিল বেকারির সম্পর্কে অনেক কথা জানতে পারবেন।
তামিল কোয়ার্টার ব্ল্যাকটাউন
ফরাসিদের জন্য যেমন হোয়াইট টাউন, তেমনই তামিল ব্রাহ্মণ ও বণিকদের জন্য আছে ব্ল্যাকটাউন। সেখানকার ঘরবাড়ি ইমারতগুলোতে তামিল সংস্কৃতি স্পষ্ট। সেখানে আরও আছে মইসন তামোলে ও মেসন পেরুমলের মতো জনপ্রিয় তামিল ভবন। এটি তার অ্যাকুয়ারেলাস গ্যালারিতে আছে অমূল্য সব শিল্প সম্পদ।
No comments:
Post a Comment