Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Monday, 26 September 2022

সূর্যের রঙ কি?

প্রতিদিন পৃথিবীর ঘুম ভাঙে সূর্যের সোনালী আলোর স্পর্শে। একটু বেলা হতে না হতেই আলোর সোনালী আভা দূর হয়ে উজ্জ্বল সাদা আলোতে ভেসে যায় চারপাশ। দুপুরটা গড়িয়ে গেলেই আবার সোনালী আভা। সন্ধ্যায় অস্ত যাবার আগে সূর্য যেন টকটকে লাল! সূর্যের এই বহুরূপের পিছনের কারণ কী? উত্তর আমাদের বায়ুমণ্ডল। কিন্তু বায়ুমণ্ডল ছাড়া সূর্য আসলে দেখতে কেমন? এর রঙটা কী আগুনে লাল, নাকি নীলাভ, সাদা? সূর্যের আসল রঙ কী?



কোনো বস্তুর রঙ কেমন হবে সেটা নির্ভর করে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ওপর। অর্থাৎ ওই বস্তু থেকে কোনো তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো এসে আমাদের চোখে পড়ে সেটা হচ্ছে তার রঙ। কোনো বস্তু লাল রংয়ের হলে, তার অর্থ—ওই বস্তু থেকে কেবল লাল রঙের জন্য নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো এসে আমাদের চোখে পড়ে। এখন যদি বস্তুটি নিজে আলোর তরঙ্গ উৎপন্ন করে, তাহলে সেটা আলোক তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে করবে। তা না হলে, অন্য কোনো উৎস থেকে আসা আলো প্রতিফলিত করবে। নির্দিষ্ট রঙের বস্তু অন্য উৎস থেকে আসা আলোক রশ্মির সব আলো শোষণ কেবল একটি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো প্রতিফলিত করে। সূর্য নিজেই আলোকরশ্মি তৈরি করে। সত্যি কথা বলতে শুধু আলো নয়, গামারশ্মি ছাড়া বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের সব তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মিই সূর্য থেকে বেরিয়ে আসে। সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৫৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোনো বস্তু থেকে বেরিয়ে আসা শীর্ষ তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত হবে, সেটা নির্ভর করে এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রার ওপর। অর্থাৎ নক্ষত্রের তাপমাত্রার ওপর এর রঙ নির্ভরশীল। এই কারণে অপেক্ষাকৃত শীতল তারাগুলো লাল দেখায়। প্রচণ্ড উত্তপ্ত তারাগুলো দেখায় নীল। মাঝখানে অন্যান্য তাপমাত্রার নক্ষত্রগুলো কমলা, হলুদ এবং সাদা রঙের হয়। সূর্যের বেলায় যে শীর্ষ তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয়েছে সেটাকে সাধারণত সবুজ হিসেবে বর্ণনা করা যায়।


দৃশ্যমান বর্ণালীর পরিসীমা বেশ ছোট। বিভিন্ন রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মাঝে পার্থক্য সামান্য। মানুষের চোখ একই উৎস থেকে নির্গত অনেক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো আলাদা করে দেখতে পায় না। সবগুলো মিলে একটি সম্মিলিত রঙ দেখে। সূর্য যদি শুধু সবুজ আলো নির্গত করত, তাহলে আমরা একে সবুজ দেখতাম। কিন্তু সূর্য যেহেতু সকল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো নির্গত করে, তাই একে সাদা দেখায়। অর্থাৎ মানুষের চোখে সূর্যের প্রকৃত রঙ হচ্ছে সাদা। এই সবগুলো রঙ আলাদাভাবে দেখার চমৎকার একটি ঘটনা হচ্ছে রামধনু। এছাড়া প্রিজমের মাধ্যমেও সূর্যের সবগুলো রঙ দেখা যায়।

তথ্যসূত্রঃ- প্রথম আলো

Friday, 23 September 2022

মহাবিশ্বের জন্মকথা

মহাবিশ্বের জন্ম নিয়ে অনেক তত্ত্ব থাকলেও মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব (Big Bang Theory) সবচেয়ে জনপ্রিয়। এটি এখনও পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তত্ত্বও বটে। এই তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন বেলজিয়ান বিজ্ঞানী জর্জ লেমেত্রে, তিনি ১৯২৭ সালে তত্ত্বটি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেন। এডুইন হাবল সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের প্রথম প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেন।



 পরবর্তী সময়ে অনেক বিজ্ঞানী এই তত্ত্বকে এগিয়ে নিয়ে যান। সাম্প্রতিক কালে, এই তত্ত্বটিকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে যান প্রয়াত জনপ্রিয় পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং। এই তত্ত্বের পক্ষে অন্যতম যুক্তি বা নিদর্শন হল মহাবিশ্বের প্রসারণ ও কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন। অনেক সীমাবদ্ধতা থাকলেও এই তত্ত্বই এখনও পর্যন্ত মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছে। মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব বলে, মহাবিশ্বের জন্ম আজ থেকে প্রায় ১৩.৭৮ বিলিয়ন (১ বিলিয়ন = ১০০ কোটি) বছর আগে একটি অতি ক্ষুদ্র বিন্দু থেকে। ওই বিন্দুটি প্রথমে বিস্ফোরিত হয়ে এবং পরে প্রসারিত ও ঠান্ডা হয়েই আজকের এই মহাবিশ্ব তৈরি হয়েছে। মহাবিশ্বের সব কটি বল একীভূত ছিল। কিন্তু প্রসারণের কারণে মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে শুরু করে। প্রাকৃতিক বলগুলোও আলাদা হয়ে ৪টি পৃথক বল প্রতিষ্ঠা করে। মহাবিশ্বের জন্মের ১০-১২ সেকেন্ডে সক্রিয় হয় হিগস ফিল্ড, যার ফলে সব পদার্থকণা ভর অর্জন করে। ১০-০৬ সেকেন্ডে গ্লুয়নের সাহায্যে দুই ধরনের কোয়ার্ক জুড়ে তৈরি হয় প্রোটন ও নিউট্রন। মহাবিশ্বের বয়স যখন ১ থেকে ১০ সেকেন্ড, মহাবিশ্বের সব কণা ও প্রতিকণা একে অপরকে ধ্বংস করে বিপুল পরিমাণ শক্তি উদ্‌গিরণ করে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে প্রতিকণার চেয়ে সাধারণ কণার পরিমাণ একটু বেশি ছিল। তাই কিছু সাধারণ পদার্থকণা অবশিষ্ট থেকে যায়। সেই অবশিষ্ট কণাগুলো দিয়েই আমাদের বিশাল মহাবিশ্ব তৈরি হয়েছে। মহাবিস্ফোরণের প্রায় ১৭ মিনিট পর মহাবিশ্বের তাপমাত্রা এমন পর্যায় আসে যে অবশেষে প্রোটন ও নিউট্রন মিলে পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠন করতে সক্ষম হয়। এর প্রায় ৩৭৯,০০০ বছর পর প্রথম চার্জনিরপেক্ষ পরমাণু তৈরি হয় এবং CMB–এর জন্ম হয়। প্রথম নক্ষত্রের জন্ম মহাবিস্ফোরণের কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন বছর পর। আজ থেকে ১৩.৬১ বিলিয়ন বছর আগে জন্ম হয় আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গার। আমাদের সূর্যের জন্ম আজ থেকে মাত্র ৪৬০ কোটি বছর আগে। পৃথিবীর বয়সও সূর্যের প্রায় কাছাকাছি, ৪৫৪ কোটি বছর।

তথ্যসূত্রঃ- প্রথম আলো

মহাবিষুব ও জলবিষুব

লাতিন শব্দ ‘ Equinox ’ ( ইকুইনক্স ) -এর বাংলা প্রতিশব্দ ‘ বিষুব ’ এবং শব্দটির অর্থ ‘ সমান রাত্রি ‘ ( Equi = equal , nox = night ) । ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে যেদিন পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান ( ৭২ ঘণ্টা দিন ও ১২ ঘণ্টা রাত্রি ) হয় , সেই বিশেষ দিনটিকে বলে বিষুব । ‘বিষুব’ শব্দের অর্থ হলো সমান দিন ও রাত্রি। পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির ফলে ২১ শে মার্চ ও ২৩ শে সেপ্টেম্বর তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়। এই বিশেষ তারিখ দুটিকে ‘বিষুব’ বলে।

মহাবিষুব:
সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করতে করতে ২১ শে মার্চ তারিখে পৃথিবী তার কক্ষপথের এমন এক স্থানে অবস্থান করে যে দিন মধ্যাহ্ণ সূর্যরশ্মি ঠিক লম্ব ভাবে নিরক্ষরেখার উপর পড়ে এবং পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে। এর ফলে ওই তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়।তাই এই ২১ শে মার্চ তারিখকে মহাবিষুব বলা হয়। এই ২১ শে মার্চ  উত্তর গোলার্ধে বসন্ত ঋতু বিরাজ করে বলে  ওই দিনটিকে বসন্তকালীন বিষুব ( Vernal or Spring equinox ) বলা হয়।


জলবিষুব:
সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করতে করতে 23 শে সেপ্টেম্বর তারিখে পৃথিবী তার কক্ষপথের এমন এক স্থানে অবস্থান করে যে দিন মধ্যাহ্ণ সূর্যরশ্মি ঠিক লম্ব ভাবে নিরক্ষরেখার উপর পড়ে এবং পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে। এর ফলে ওই তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়। তাই এই 23 শে সেপ্টেম্বর তারিখকে জলবিষুব বলা হয়।এই 23 শে সেপ্টেম্বর উত্তর গোলার্ধে শরৎ ঋতু বিরাজ করে বলে  ওই দিনটিকে শরৎকালীন বিষুব (Autumnal equinox ) বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য:
১)মহাবিষুব ও জলবিষুবের সময় পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়।
২)মহাবিষুব ও জলবিষুবের দিন সূর্য ঠিক পূর্ব দিকে উদিত হয় এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায়।
৩)এই দিন দুটিতে ছায়াবৃত্ত প্রতিটি অক্ষরেখাকে সমদ্বিখণ্ডিত করে।
৪)এই দিন দুটিতে মধ্যাহ্ন সূর্য রশ্মি  নিরক্ষরেখার উপর 90° কোণে পতিত হয়।

Friday, 9 September 2022

মেরুজ্যোতি : রাতের আকাশে রঙের খেলা

ক্যানভাসে যেমন রঙ-তুলির খেলা চলে, রাতের আকাশেও কখনো কখনো প্রকৃতির রঙ আর তুলির সমন্বয়ে যেন ক্যানভাসই হয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে ইলেকট্রনকে তুলি আর রঙ হিসেবে পরমাণুদের ধরে নেওয়া যায়। আসল কথা হল, সূর্যের অভ্যন্তরে যে বিস্ফোরণ সংঘটিত হয়, তাতে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম পরমাণু আন্দোলিত হতে থাকে। এতে ইলেকট্রন, প্রোটন সূর্যের বায়ুমণ্ডলের উত্তপ্ত বহিস্থ স্তর করোনা থেকে দ্রুতগতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। এই ব্যাপারটিই সৌরবায়ু বা সৌরঝড় নামে পরিচিত। সৌরবায়ু হল মুক্ত চার্জযুক্ত প্লাজমা কণা এবং গামারশ্মি, রঞ্জনরশ্মির মতো ক্ষতিকর রশ্মির সমন্বয়ে তৈরি, যা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। পৃথিবীতে আসার সময় সৌরবায়ু নিজেই তার চারপাশে একটি চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি, যা করোনাল মাস ইজেকশন নামে পরিচিত। ১০০ কোটি পরমাণু বোমা একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটলে যে পরিমাণ শক্তির জন্ম হয়, ঠিক ততটাই শক্তিশালী এই চৌম্বকক্ষেত্র। কিন্তু পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের কাছাকাছি এসে এরা বাধাপ্রাপ্ত হয়। তবে কিছু কণা পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে আটকে পড়ে এবং চৌম্বকরেখা বরাবর ক্রিয়া করে। এসব কণাই পরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একটা স্তরে প্রবেশ করে। এই কণাগুলোর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢোকার সবচেয়ে সুবিধাজনক এলাকা হল পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চল। মুক্ত প্রোটন ও ইলেকট্রনগুলো বায়ুমণ্ডলে ভাসতে থাকা অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন পরমাণুদের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায়। সংঘর্ষের সময় কিছু শক্তি উৎপন্ন হয়। এই শক্তি গ্রহণ করে পরমাণুর ইলেকট্রন নিম্ন শক্তিস্তর থেকে উচ্চ শক্তিস্তরে প্রবেশের সুযোগ পায়। পরে নিম্ন শক্তিস্তরে ফিরে আসার সময় শক্তি বিকিরণ করে। বিকিরিত সেই শক্তিই ফোটন বা ফোটনের ঝাঁক বা আলো হিসেবে দেখা দেয়। সেই আলোকেই আমরা মেরুজ্যোতি বলে থাকি।



মেরুজ্যোতির ইংরাজি নাম অরোরা (Aurora), যা রোমান পুরাণের ভোরের দেবী অরোরার নাম থেকে এসেছে। উত্তর মেরু অঞ্চলের মেরুজ্যোতি গ্রিক পুরাণের উত্তর বায়ুর দেবতা বোরিয়াস-এর নামানুসারে 'অরোরা বোরিয়ালিস' (Aurora borealis) নামে পরিচিত। দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের মেরুজ্যোতি গ্রিক পুরাণের দক্ষিণ বায়ুর দেবতা অস্টার-এর নামানুসারে 'অরোরা অস্ট্রালিস' (Aurora australis) নামে পরিচিত। উভয় গোলার্ধে সাড়ে ৬৬ ডিগ্রি উত্তর/দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে মেরুবিন্দু পর্যন্ত অঞ্চলে মেরুজ্যোতি দেখা যায়। সবক'টা রঙ কিন্তু আকাশে মেরুরেখায় দেখা সম্ভব নয়। সাধারণত অক্সিজেনের সঙ্গে সৌরকণাদের সংঘর্ষে সবুজ বা লাল রঙ দেখা যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় এই রঙের আলো দেখা যায়। তবে ভূমি থেকে ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে যে আলো দেখা যায়, তার রঙ সবুজ, এর ওপরের রঙ লাল রঙের। অন্যদিকে নাইট্রোজেনের সঙ্গে সংঘর্ষে গাঢ় লাল অথবা নীল রঙ দেখা যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬০ কিলোমিটার উচ্চতার কাছাকাছি গাঢ় লাল, এর বেশি উচ্চতায় সংঘর্ষ হলে নীল রঙের আলোর ঝলক দেখা যায়।

তথ্যসূত্রঃ- প্রথম আলো

Saturday, 3 September 2022

গ্রহ-উপগ্রহদের গায়ের গন্ধ


কুকুর মানুষের গায়ের গন্ধ থেকে অপরাধী শনাক্ত করতে পারে। প্রতিটি মানুষের গায়ের গন্ধ আলাদা। কুকুর সেই গন্ধ আলাদা করে চিনতে পারে। মানুষের গায়ের গন্ধের জন্য দায়ী আসলে ঘাম। শুধু ঘাম নয়, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে আসা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ এই গন্ধ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। প্রত্যেক মানুষের গন্ধ যেমন আলাদা, তেমনি সৌরজগতের প্রতিটি গ্রহ-উপগ্রহের গন্ধ আলাদা। পৃথিবীর গন্ধ তাহলে কেমন?এই প্রশ্নের এককথায় উত্তর হয় না। স্থান–কাল–পাত্রভেদে পৃথিবীর গন্ধ আলাদা। তাই ভারতের প্রকৃতি-পরিবেশের যেমন গন্ধ, সেটা মিলবে না আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ব্রিটেনের সঙ্গে। পৃথিবীর আবহাওয়া সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জটিল। তাই একক কোনো গন্ধকে পৃথিবীর গন্ধ বলে চালিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। শনির চাঁদ টাইটানের পরিবেশ ও আবহাওয়া নিয়ে একটা গবেষণা চালিয়েছেন নাসার গডার্ড স্পেস সেন্টারের গবেষকেরা। তাঁরা দাবি করেছেন, নাইট্রোজেন আর মিথেন ছাড়াও তৃতীয় একটা রহস্যময় পদার্থ আছে টাইটানের বায়ুমণ্ডলে। সেটা হলো বেনজিন যৌগ। আর এর কারণেই টাইটানের গায়ে (আসলে ভূমণ্ডলে) মিষ্টি একটা গন্ধ আছে। অনেকটা পেট্রলের গন্ধের মতো। কারণ, পেট্রলের প্রধান উপাদান বেনজিন যৌগ। তবে, টাইটানের গায়ে গন্ধ থাকলেও, শনির কোনো গন্ধ নেই। আসলে শনির বায়ুমণ্ডল নেই বললেই চলে। আর যেখানে বায়ুমণ্ডলের প্রধান দুই উপাদান হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম। এই দুটি গ্যাসই গন্ধহীন। একই কারণে নেপচুনের গন্ধ নেই।


ইউরেনাসও গ্যাসীয় গ্রহ। তবে এর বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদান হাইড্রোজেন সালফাইড। তাহলে ইউরেনাসের গন্ধটা কেমন হবে বলুন তো। হাইড্রোজেন সালফাইডের গন্ধ কেমন? প্র্যাকটিক্যাল ল্যাবে রসায়নের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন অথচ পচা ডিমের গন্ধ পাননি, এমন লোকের সংখ্যা বিরল। ডিম পচে গেলে এর ভেতর জমা হয় হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস। পচা ডিমের যে আঁশটে গন্ধ, সেটার জন্য এই গ্যাসই দায়ী। সুতরাং ইউরেনাসের গন্ধ তাই পচা ডিমের মতো। শুক্র, মঙ্গল ও বায়ুমণ্ডলেও প্রচুর পরিমাণ হাইড্রোজেন সালফাইড আছে। তাই এই দুটি গ্রহের গন্ধও পচা ডিমের মতো।

সৌরজগৎ এর বৃহত্তম গ্রহ হল বৃহস্পতি, যা আসলে বিশাল এক গ্যাস দানব। এর বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন গ্যাসের রাজত্ব। তাই পচা ডিমের গন্ধ পাবেন এর কোনো কোনো অঞ্চলে। আবার কোথাও মানুষের প্রস্রাবের গন্ধ। পচা ডিমের গন্ধের কারণ, সে অঞ্চলে হাইড্রোজেন সালফাইডের রাজত্ব বেশি। তেমনি কোনো অঞ্চলে আবার অ্যামোনিয়ার রাজত্ব। আমাদের প্রস্রাবে প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়া অর্থাৎ NH3 যৌগ আছে। আর এই যৌগ যেখানেই পাবেন, সেখানকার গন্ধ প্রস্রাবের মতো হবে। এই কারণে ইউরিয়া সারের গন্ধ মানুষের ইউরিনের মতো। আমাদের প্রিয় চাঁদের বায়ুমণ্ডল নেই বললেই চলে। তবুও এর গন্ধ আছে। এর ভূত্বকের কারণে। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের চেহারা–নাম যত সুন্দর, এর গন্ধটা কিন্তু পৃথিবীর অন্যতম বিধ্বংসী বস্তুর মতো। গানপাউডার বা পোড়া বারুদ থেকে যেমন গন্ধ ছড়ায়, চাঁদের মাটির গন্ধটাও তেমন। বারুদের প্রধান উপাদান হালকা ওজনের কার্বন, যার আদুরে নাম চারকোল। এছাড়া আছে সল্টপিটার বা সোডিয়াম নাইট্রেড ও সালফার। বারুদের এই তিন উপাদনের মধ্যে কেবল সালফারই আছে চাঁদের মাটিতে বা ধূলোবালিতে। খুব সামান্য পরিমাণে। কিন্তু এ কারণে পোড়া বারুদের মতো গন্ধ হওয়ার কথা নয়। চাঁদের মাটির গন্ধ কেন পোড়া বারুদের মতো, সে রহস্যের সমাধান এখনো হয়নি।

তথ্যসূত্রঃ- প্রথম আলো

Friday, 2 September 2022

জঙ্গল থেকে জামশেদপুর... এক শহর তৈরির গল্প!

বারাসাত, ব্যারাকপুর, বারুইপুরের মত জায়গায় থাকার জন্য যদি প্রতিনিয়ত আপনাকে শুনতে হয় আপনি উদ্বাস্তু, গ্রাম থেকে শহরে কাজের খোঁজে আসেন, তা হলে এবার আপনার ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। কলকাতার বাইরেও যে একটা বাংলা রয়েছে, কিংবা মুম্বইয়ের বাইরে একটা মহারাষ্ট্র তার রূপক হয়ে এই দেশের বুকে বেড়ে উঠছে আর এক শহর৷ না, কলকাতার শহুরে বাবুদের শহরে থাকার প্রত্যক্ষ গরিমায় আর জটিলতা নয়, তথাকথিত জঙ্গলের দেশ ঝাড়খণ্ডে সবুজের মধ্যে সকলে একত্রিত হয়ে গড়ে ওঠা স্বপ্নের শহর, জামশেদপুর৷



জঙ্গলে ঘেরা গ্রাম শাকচি, আর সেই শাকচির পাশেই একদিন খুঁজে পাওয়া গেল এক ধাতু। এ দেশের ধুলোবালিতে মিশে আছে লোহা৷ আর সেই লোহার খোঁজে শাকচির পাশে বাসা বাঁধল সেই সময়ে দেশের সবথেকে বড় কোম্পানি টাটা গোষ্ঠী। কিন্তু না, গল্পটা বাকি কোম্পানির সাথে সেখানকার লোকেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের নয়, বরং কিছুটা উল্টো৷ লালমাটি আর বন্ধ্যা জমির দেশ ঝাড়খণ্ডে তারা স্থাপন করল এ দেশের প্রথম স্টিল কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর। শুরু হল কাজ। স্থানীয় লোকেরাই তুলে নিল কারখানা দাঁড় করানোর দায়িত্ব৷ তারা বুঝল এ জমির বুকে রয়েছে তাঁদের বেঁচে থাকার রসদ, আর সেই রসদকে দেশের সামনে তুলে ধরতে পারে একমাত্র এই কোম্পানিই৷ কিন্তু শুধু কারখানা তৈরি করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন সেই কোম্পানি চালানোর লোকেদের বাসস্থানের জায়গা। আর শুধুই কি কোম্পানির বাবু আর সাহেবদের ঘর? জামশেদজি টাটা কোনও দিন আলাদা করেননি তাঁর শ্রমিকদের। কারখানার পরিবারে শ্রমিকরাও সদস্য। কারখানার সমস্ত শ্রমিকদের জন্যও তৈরি হবে ঘর।


সমস্ত শ্রমিকদের জন্য যদি বাসস্থান তৈরি করতে হয় তা হলে হিসাব করে দেখা গেল ছোটখাটো একটা শহর তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু তাতেও পিছপা হলেন না জামশেদজী। আমেরিকা থেকে ইঞ্জিনিয়ার এল। জুলিয়ান কেনেডি এবং এক্সেল শাহিন। আমেরিকার পিটসবার্গের বিখ্যাত স্টিল সিটির আদলে প্ল্যান করা হল জামশেদপুর শহরের৷ প্রথম অবস্থাতেই দশ হাজার কর্মীর বাসস্থানের বন্দোবস্ত করা হল। গড়ে উঠতে থাকল শহর, একটু একটু করে বাস্তবে রূপ নিল কারখানাকে কেন্দ্র করে এক অলীক স্বপ্ন। সেই শহরে কী নেই- খেলার মাঠ, বাজার করার জায়গা, ম্যানেজার থেকে নিচুতলার কর্মী, সকলের জন্য বাংলো।


কিন্তু দশ হাজার লোকের শহর শুনে যারা মুচকি হেসেছিলেন, তাদের ভুল প্রমাণ করে মাত্র দশ বছরে এই শহরের লোকসংখ্যা হয়ে দাঁড়াল পঞ্চাশ হাজার। আর কালের নিজস্ব নিয়মে এই দেশ দেখল এক ভয়ঙ্কর দু:স্বপ্ন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ৷ যে সমস্যার কথা কেউ কল্পনাও করেনি, সেই সমস্যাই একসাথে থাকার ফলে রুখে দিল টাটা স্টিল কারখানা৷ ১৯১৯ সালে শাকচির বাজারে দাঁড়িয়ে বক্তৃতায় স্বীকার করলেন সেই সময়ের গভর্নর ও ভাইসরয়, লর্ড চেমসফোর্ড। যারা এ দেশের রেল ব্যবস্থার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইংরেজদের, তারা ভুলে যান এই দেশেরই এক কোম্পানি টাটা স্টিল বিশ্বযুদ্ধের এই সাংঘাতিক সময়ে গোটা দেশকে উপহার দিয়েছে মাইলের পর মাইল রেলের লাইন। শুধু এই দেশ নয়, ইংরেজ অধীন বিভিন্ন দেশ যেমন মেসোপোটেমিয়া, ইজিপ্ট, প্যালেস্টাইন এবং ইস্ট আফ্রিকার মত দেশেও রপ্তানি হয়েছে হাজার হাজার টন রেলের লাইন। মিত্রশক্তিকে এই সময় টাটা স্টিল উপহার দিয়েছে তিন লক্ষ টন স্টিল। আর সে কারণেই লর্ড চেমসফোর্ড এই শহরের নাম ঠিক করেন জামশেদজির নামে। ভারতীয় শিল্পের জনক জামশেদজির স্বপ্ন শহর জামশেদপুর।


কিন্তু উত্থানের সাথে পতনের কাহিনী না থাকলে উপন্যাসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এ শহরের সদস্য সংখ্যা তখন বাড়তে বাড়তে দেড় লক্ষ। পিটসবার্গের পর এ বারে ইংল্যান্ডের নবনির্মিত শহর লেচওয়ার্থের মত করে গড়ে উঠেছে নিকাশি ব্যবস্থা। নির্দিষ্ট নিয়মমাফিক মন্দির, মসজিদ, গির্জা। আয়তনে আরও বড় হয়ে দেশের বুকে হীরের মত জ্বলজ্বল করছে জামশেদপুর। আর সেই আলোই কাল হয়ে উঠল এই শহরের জন্য। চীন বর্মা ভারতের ত্রিকোণ যুদ্ধে যখন জাপান যোগদান করল, তখন এই শহর হয়ে উঠল জাপানি যুদ্ধবিমানের প্রধান বোমাবর্ষণের লক্ষ্য। রাতের পর রাত যায়, সব কিছু থমকে দিয়ে সাইরেন বেজে ওঠে, গোটা শহর অন্ধকার হয়ে বসে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে, আর শব্দ শোনে বিমান উড়ে যাওয়ার৷ কিন্তু এ ভাবে বেশি দিন চলতে হল না। গার্ডেন সিটির বুকে গড়ে উঠল বাঙ্কার। হাতে হাত ধরে দু:স্বপ্নের এই রাত পেরোল জামশেদপুর।


তারপর আর কোনও দিন পিছনে ফিরে তাকায়নি এ শহর৷ ১৯৫৯-এর এক সার্ভে বলছে, এ দেশের মেধাবী ছাত্রদের অন্যতম ঠিকানা হয়েছে জামশেদপুর। শুধু স্টিল কারখানাই নয়, এ শহরের বুকে তৈরি হয়েছে টাটা মোটরস থেকে টেলকোর মত কারখানা। বাড়তে বাড়তে এখন এই শহর দশ লক্ষের মাত্রা ছুঁয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এটিই দেশের একমাত্র শহর যেখানে কোনও মিউনিসিপ্যালিটি নেই। ২০০৫ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘে বিশ্বের প্রথম সারির শহরের তালিকায় সান ফ্রান্সিসকো, নাইরোবি, মেলবোর্নের পাশাপাশি নাম এসেছে জামশেদপুরের৷ শুধু উন্নতিই নয়, রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই তালিকা তৈরির সময়ে মাথায় রাখা হয়েছিল মানুষের জীবনযাত্রার মান, সরকারের সাথে পাশাপাশি ব্যবসার কৌশল, এই শহরের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার মান ইত্যাদির উপরেও। আর সেখানেই দেশের আপাত গর্বের শহরগুলিকে অনেক অনেক পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে জামশেদপুর। বন্ধ্যা জমি থেকে বিশ্বসেরার শিরোপা, এই শহর দেখিয়ে দিয়েছে যে অপমান আর তাচ্ছিল্য নিয়ে শহুরে যে গরিমায় উচ্চারিত হয় ‘জংলি’ আর ‘গেঁয়ো’-র মত শব্দগুলি, সেই গরিমা ঝরাপাতার মত ম্লান হয়ে যায় আন্তরিকতা আর দেশের মাটির সোঁদা গন্ধের সামনে।

সৌজন্যেঃ- এই সময়

Thursday, 1 September 2022

হাওড়া একটি নদীর নাম!

'হাওড়া' নামটি শুনলেই আমাদের মনে আসে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলা এবং হাওড়া শহরের কথা। কিন্তু জানেন কি, ত্রিপুরা রাজ্যে হাওড়া নামে একটি নদী রয়েছে। হাওড়া নদী (Haora River) ত্রিপুরার বড়মুড়া পাহাড় থেকে উৎপত্তি লাভ করে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা ছুঁয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিতাস নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।



হাওড়া নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি নদী। নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩ কিমি, নদীটির প্রকৃতি সরলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক হাওড়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ২৪।

হাওড়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তারপর এটি কিছুদুর প্রবাহিত হয়ে আখাউড়া উপজেলার তিতাস নদীতে পতিত হয়েছে। হাওড়া নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩ কিমি, যার মধ্যে ত্রিপুরার অন্তর্গত ৫৩ কিমি এবং বাংলাদেশের অন্তর্গত ১০ কিমি।

 বাংলাদেশে নদীটির প্রস্থ গঙ্গাসাগর সেতু এলাকায় ৪০ মিটার এবং গভীরতা ৩.৫ মিটার। হাওড়া নদীর অববাহিকার আয়তন ৭০ বর্গকিলোমিটার। নদীটিতে সারাবছর জলপ্রবাহ থাকে না। তবে জোয়ার ভাটার প্রভাব আছে এই নদীতে। জুলাই-আগস্টে বেশি জলপ্রবাহের সময় প্রবাহের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৮ ঘনমিটার/সেকেন্ড। সাধারণত বন্যা হয় না। এই নদীর উপর আখাউড়া রেলসেতু রয়েছে।

  ত্রিপুরাতে হাওড়া নদীর অববাহিকা অঞ্চলের আয়তন ৫৭০ বর্গকিমি। স্থানীয় ককবরক ভাষায় এই নদীর নাম সাইদ্রা (Saidra)। হাওড়া নদী ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার এবং সংলগ্ন এলাকার পানীয় জলের চাহিদা মেটায়। তাই হাওড়া নদী আগরতলার জীবনরেখা (Lifeline of Agartala) নামে পরিচিত। তবে, আগরতলা শহরকে বন্যা থেকে বাঁচাতে হাওড়ার গতিপথ পাল্টে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নদীতে শিল্প-বর্জ্য মিশছে এবং হাওড়া নদীর জলের উৎসরূপ ঘোড়ামারা, বরদোয়াল প্রভৃতি ঝোরাগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে, নদীটির প্রশস্ততা ও গভীরতা কমছে, কমছে জলপ্রবাহের পরিমাণও।

‘কুয়াশার শহর’ সৌদি আরবের আল-নমাস

 সৌদি আরব হল বিস্তীর্ণ মরুভূমির দেশ। কিন্তু মরুভূমি নয়, সবুজে ভরা একটি শৈল শহর হল সৌদি আরবের আসির প্রদেশের অন্তর্গত আল-নমাস (Al-Namas)।

 এখানে রয়েছে সবুজ পাহাড়, সঙ্গে মেঘ-কুয়াশার খেলা। দক্ষিণ সৌদি আরবের এই শহরটি ‘কুয়াশার শহর’ (City of Fog) নামে পরিচিত। কারণ সারাওয়াত পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত এই পাহাড়ি শহরটির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৩৮৫ মিটার বা ৭৮২৫ ফুট। এই পাহাড়ি শহর অনেক সময়েই ঢেকে থাকে কুয়াশায়। গ্রীষ্মে সৌদি আরবের অন্যত্র যখন উষ্ণতা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে যায়, তখন এই শহরের উষ্ণতা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে। রাতে তাপমাত্রা নেমে আসে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। শীতকালে কখনও কখনও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায় বলেও দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। সৌদি আরবের বাসিন্দাদের কাছে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই শৈলশহর। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধের থেকে এই শহরটির দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৮০০ কিলোমিটার। সড়কপথে যেতে সময় লাগে প্রায় ১২ ঘণ্টা। আসির প্রদেশের রাজধানী আভা শহর থেকে আল-নমাসের দূরত্ব ১২০ কিমি। এই শতকের শেষে আরও বাড়বে বিশ্বের গড় উষ্ণতা। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে কঠিন হবে মরু শহরগুলিতে বসবাস করাও। তাই ভবিষ্যতে শুধু পর্যটন নয়, বসবাসের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে আল-নমাস শহর।

তথ্যসূত্রঃ- আনন্দবাজার পত্রিকা