'হাওড়া' নামটি শুনলেই আমাদের মনে আসে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলা এবং হাওড়া শহরের কথা। কিন্তু জানেন কি, ত্রিপুরা রাজ্যে হাওড়া নামে একটি নদী রয়েছে। হাওড়া নদী (Haora River) ত্রিপুরার বড়মুড়া পাহাড় থেকে উৎপত্তি লাভ করে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা ছুঁয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিতাস নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।
হাওড়া নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি নদী। নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩ কিমি, নদীটির প্রকৃতি সরলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক হাওড়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ২৪।
হাওড়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তারপর এটি কিছুদুর প্রবাহিত হয়ে আখাউড়া উপজেলার তিতাস নদীতে পতিত হয়েছে। হাওড়া নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩ কিমি, যার মধ্যে ত্রিপুরার অন্তর্গত ৫৩ কিমি এবং বাংলাদেশের অন্তর্গত ১০ কিমি।
বাংলাদেশে নদীটির প্রস্থ গঙ্গাসাগর সেতু এলাকায় ৪০ মিটার এবং গভীরতা ৩.৫ মিটার। হাওড়া নদীর অববাহিকার আয়তন ৭০ বর্গকিলোমিটার। নদীটিতে সারাবছর জলপ্রবাহ থাকে না। তবে জোয়ার ভাটার প্রভাব আছে এই নদীতে। জুলাই-আগস্টে বেশি জলপ্রবাহের সময় প্রবাহের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৮ ঘনমিটার/সেকেন্ড। সাধারণত বন্যা হয় না। এই নদীর উপর আখাউড়া রেলসেতু রয়েছে।
ত্রিপুরাতে হাওড়া নদীর অববাহিকা অঞ্চলের আয়তন ৫৭০ বর্গকিমি। স্থানীয় ককবরক ভাষায় এই নদীর নাম সাইদ্রা (Saidra)। হাওড়া নদী ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার এবং সংলগ্ন এলাকার পানীয় জলের চাহিদা মেটায়। তাই হাওড়া নদী আগরতলার জীবনরেখা (Lifeline of Agartala) নামে পরিচিত। তবে, আগরতলা শহরকে বন্যা থেকে বাঁচাতে হাওড়ার গতিপথ পাল্টে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নদীতে শিল্প-বর্জ্য মিশছে এবং হাওড়া নদীর জলের উৎসরূপ ঘোড়ামারা, বরদোয়াল প্রভৃতি ঝোরাগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে, নদীটির প্রশস্ততা ও গভীরতা কমছে, কমছে জলপ্রবাহের পরিমাণও।
No comments:
Post a Comment