Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Saturday, 3 September 2022

গ্রহ-উপগ্রহদের গায়ের গন্ধ


কুকুর মানুষের গায়ের গন্ধ থেকে অপরাধী শনাক্ত করতে পারে। প্রতিটি মানুষের গায়ের গন্ধ আলাদা। কুকুর সেই গন্ধ আলাদা করে চিনতে পারে। মানুষের গায়ের গন্ধের জন্য দায়ী আসলে ঘাম। শুধু ঘাম নয়, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে আসা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ এই গন্ধ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। প্রত্যেক মানুষের গন্ধ যেমন আলাদা, তেমনি সৌরজগতের প্রতিটি গ্রহ-উপগ্রহের গন্ধ আলাদা। পৃথিবীর গন্ধ তাহলে কেমন?এই প্রশ্নের এককথায় উত্তর হয় না। স্থান–কাল–পাত্রভেদে পৃথিবীর গন্ধ আলাদা। তাই ভারতের প্রকৃতি-পরিবেশের যেমন গন্ধ, সেটা মিলবে না আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ব্রিটেনের সঙ্গে। পৃথিবীর আবহাওয়া সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জটিল। তাই একক কোনো গন্ধকে পৃথিবীর গন্ধ বলে চালিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। শনির চাঁদ টাইটানের পরিবেশ ও আবহাওয়া নিয়ে একটা গবেষণা চালিয়েছেন নাসার গডার্ড স্পেস সেন্টারের গবেষকেরা। তাঁরা দাবি করেছেন, নাইট্রোজেন আর মিথেন ছাড়াও তৃতীয় একটা রহস্যময় পদার্থ আছে টাইটানের বায়ুমণ্ডলে। সেটা হলো বেনজিন যৌগ। আর এর কারণেই টাইটানের গায়ে (আসলে ভূমণ্ডলে) মিষ্টি একটা গন্ধ আছে। অনেকটা পেট্রলের গন্ধের মতো। কারণ, পেট্রলের প্রধান উপাদান বেনজিন যৌগ। তবে, টাইটানের গায়ে গন্ধ থাকলেও, শনির কোনো গন্ধ নেই। আসলে শনির বায়ুমণ্ডল নেই বললেই চলে। আর যেখানে বায়ুমণ্ডলের প্রধান দুই উপাদান হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম। এই দুটি গ্যাসই গন্ধহীন। একই কারণে নেপচুনের গন্ধ নেই।


ইউরেনাসও গ্যাসীয় গ্রহ। তবে এর বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদান হাইড্রোজেন সালফাইড। তাহলে ইউরেনাসের গন্ধটা কেমন হবে বলুন তো। হাইড্রোজেন সালফাইডের গন্ধ কেমন? প্র্যাকটিক্যাল ল্যাবে রসায়নের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন অথচ পচা ডিমের গন্ধ পাননি, এমন লোকের সংখ্যা বিরল। ডিম পচে গেলে এর ভেতর জমা হয় হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস। পচা ডিমের যে আঁশটে গন্ধ, সেটার জন্য এই গ্যাসই দায়ী। সুতরাং ইউরেনাসের গন্ধ তাই পচা ডিমের মতো। শুক্র, মঙ্গল ও বায়ুমণ্ডলেও প্রচুর পরিমাণ হাইড্রোজেন সালফাইড আছে। তাই এই দুটি গ্রহের গন্ধও পচা ডিমের মতো।

সৌরজগৎ এর বৃহত্তম গ্রহ হল বৃহস্পতি, যা আসলে বিশাল এক গ্যাস দানব। এর বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন গ্যাসের রাজত্ব। তাই পচা ডিমের গন্ধ পাবেন এর কোনো কোনো অঞ্চলে। আবার কোথাও মানুষের প্রস্রাবের গন্ধ। পচা ডিমের গন্ধের কারণ, সে অঞ্চলে হাইড্রোজেন সালফাইডের রাজত্ব বেশি। তেমনি কোনো অঞ্চলে আবার অ্যামোনিয়ার রাজত্ব। আমাদের প্রস্রাবে প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়া অর্থাৎ NH3 যৌগ আছে। আর এই যৌগ যেখানেই পাবেন, সেখানকার গন্ধ প্রস্রাবের মতো হবে। এই কারণে ইউরিয়া সারের গন্ধ মানুষের ইউরিনের মতো। আমাদের প্রিয় চাঁদের বায়ুমণ্ডল নেই বললেই চলে। তবুও এর গন্ধ আছে। এর ভূত্বকের কারণে। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের চেহারা–নাম যত সুন্দর, এর গন্ধটা কিন্তু পৃথিবীর অন্যতম বিধ্বংসী বস্তুর মতো। গানপাউডার বা পোড়া বারুদ থেকে যেমন গন্ধ ছড়ায়, চাঁদের মাটির গন্ধটাও তেমন। বারুদের প্রধান উপাদান হালকা ওজনের কার্বন, যার আদুরে নাম চারকোল। এছাড়া আছে সল্টপিটার বা সোডিয়াম নাইট্রেড ও সালফার। বারুদের এই তিন উপাদনের মধ্যে কেবল সালফারই আছে চাঁদের মাটিতে বা ধূলোবালিতে। খুব সামান্য পরিমাণে। কিন্তু এ কারণে পোড়া বারুদের মতো গন্ধ হওয়ার কথা নয়। চাঁদের মাটির গন্ধ কেন পোড়া বারুদের মতো, সে রহস্যের সমাধান এখনো হয়নি।

তথ্যসূত্রঃ- প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment