Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Wednesday, 23 November 2022

পৃথিবীর কেন বলয় নেই?


বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। গঠনগত কারণে সৌরজগতের এই চারটি গ্রহকে বলা হয় গ্যাসীয় দানব গ্রহ। শনির বলয়ের কথা আমরা কম-বেশি প্রায় সবাই জানি। তবে শুধু শনি নয়, সৌরজগতের এই চারটি গ্যাসীয় দানব গ্রহেরই বলয় রয়েছে। এই বলয়গুলি মূলত ধূলিকণা ও বিভিন্ন গ্যাসীয় অণুর মিশ্রণে তৈরি। কিন্তু পৃথিবীর কোনো বলয় নেই৷ কেন? সৌরজগতের বাকি তিনটি গ্রহ অর্থাৎ মঙ্গল, শুক্র ও বুধ পৃথিবীর মতোই পাথুরে ধরনের। এদের চারপাশে নেই কোন বলয়। কিন্তু কেন? পাথুরে গ্রহ বলেই কি? নাকি ভিন্ন কারণ? গ্রহের চারপাশে বলয় কীভাবে তৈরি হয়, তা নিয়ে দুটি তত্ত্ব রয়েছে। প্রথম তত্ত্ব বলে, গ্রহ তৈরি হওয়ার সময় গ্রহের অবশিষ্ট উপদান থেকে তৈরি হতে পারে বলয়। দ্বিতীয় তত্ত্ব বলে, গ্রহের উপগ্রহ ধ্বংসের মাধ্যমে বলয় তৈরি হতে পারে। অনেকরকম ভাবে উপগ্রহ ধ্বংস হতে পারে। বাইরের কোন উল্কা বা গ্রহাণুর আঘাতে পুরো উপগ্রহ ছিন্নভিন্ন হতে পারে। আবার তীব্র মহাকর্ষ বলের টানে কোনো উপগ্রহ মাতৃগ্রহের উপর আছড়ে পড়ে ধ্বংস হতে পারে। যেভাবেই হোক না কেন, ফলাফল গ্রহের বলয় তৈরি। তবে বলয় স্থিতিশীল থাকবে কিনা, তা নির্ভর করে গ্রহের নিজস্ব মহাকর্ষ ক্ষেত্রের উপর।



গ্যাসীয় দানব গ্রহগুলির চারপাশে কেন বলয় রয়েছে, তাঁর সদুত্তর নেই বিজ্ঞানীদের কাছে। এই গ্রহগুলি সৌরজগতের অপেক্ষাকৃত দূরের অংশে অবস্থিত। অন্যদিকে পাথুরে গ্রহগুলির অবস্থান সূর্যের অনেকটাই কাছাকাছি। সৌরজগতের ভিতরের দিকে। সূর্যের এবং গ্রহের নিজস্ব মহাকর্ষ বলের উল্লেখযোগ্য তারতম্য আছে এই দুই অংশে। দুই অংশকে বিভক্ত করেছে অদৃশ্য স্নো লাইন বা ফ্রস্ট লাইন। যে দূরত্ব পার হলে নক্ষত্রের আলোতে বরফ দীর্ঘ সময় একই অবস্থায় থাকতে পারে, সেই দূরত্বকে স্নো লাইন বলে। সূর্যের ক্ষেত্রে প্রায় ৫ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট দূরে এই স্নো লাইন/ফ্রস্ট লাইনের অবস্থান। পৃথিবীসহ ফ্রস্ট লাইনের ভিতরের গ্রহগুলির বলয় না থাকার একটি কারণ, সূর্যের বিপুল তাপমাত্রা হতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া সূর্যের কাছাকাছি থাকায় এই গ্রহগুলি অপেক্ষাকৃত বেশি মহাকর্ষ টান অনুভব করে গ্রহগুলো। ফলে গ্রহের জন্মের সময় বলয় থাকলেও তা একসময় একত্রিত হয়ে উপগ্রহে পরিণত হতে পারে। এসব কারণে এই গ্রহগুলির চারপাশে বলয়ের অস্তিত্ব দেখা যায় না। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, অতীতে কোন একসময় পৃথিবীর চারপাশে বলয় ছিল। পৃথিবীর জন্মের শুরু দিকে মঙ্গল গ্রহের মতো বিশাল কোন বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল। সেই সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছিল ভারী বলয়। পরে ধীরে ধীরে বলয়ের পদার্থসমূহ একত্রিত হয়েই আজকের চাঁদ তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এটি পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের জন্মতত্ত্বগুলির মধ্যে একটি। আসন্ন আর্টেমিস মিশনে চাঁদ নিয়ে আরও বিশদ গবেষণা করা হবে। সেই গবেষণায় চাঁদের জন্মরহস্যের পাশাপাশি হয়তো বা জানা যাবে পৃথিবীর বলয়ের রহস্যটাও।

সৌজন্যেঃ- প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment