Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Saturday, 27 June 2020

‘চুম্বক পাহাড়’ বা ম্যাগনেটিক হিল - লাদাখ

            লাদাখ। শব্দটি কানে আসতেই মনের অজান্তেই একটি নিজস্ব চিত্র ভেসে আসে। সেই চিত্রের রুপকল্পে আমরা চিরসুন্দর প্রকৃতি থেকে শুরু করে চিরসুখী  মানুষদেরও কল্পনা করি। অবশ্য এই রূপকল্পটা যে খুব একটা অতিরঞ্জিত, তা কিন্তু নয়। মুঘল সম্রাট শাহজাহান একবার বলেছিলেন, পৃথিবীতে যদি স্বর্গ বলে কোনো স্থান থাকে তবে সেটা কাশ্মির। তবে শাহজাহান যদি একবার অন্তত লাদাখ ঘুরে আসতে পারতেন তাহলে নিশ্চিত তার স্বর্গের ঠিকানা পাল্টে যেত। অথবা, এমনও হতে পারে যে তিনি কাশ্মির বলে ওই গোটা অঞ্চলটিকেই বুঝিয়েছিলেন।


            লাদাখ মানেই স্বর্গীয় সৌন্দর্যের রূপকথার দেশ। প্রকৃতি তার সকল সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে এখানে। চিরসুন্দর প্রকৃতি থেকে শুরু করে এখানকার মানুষ, সংস্কৃতি সবকিছুই যেন এক স্নিগ্ধতায় পরিপূর্ণ। লাদাখের অপার সৌন্দর্যে হারাতে তাই পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। স্বর্গীয় সৌন্দর্যের মাঝে প্রকৃতির কাছে নিজেকে সঁপে দেন। লেহ লাদাখের প্রতিটি জায়গায়ই রয়েছে সৌন্দর্যের এক অনন্য মাত্রা। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাহিরেও এখানে আছে রহস্যময়তা। রহস্যেঘেরা এই জায়গাটিতেই অবস্থিত ‘চুম্বক পাহাড়’ বা ম্যাগনেটিক হিল (Magnetic Hill)।


               পাহাড়টি নিমুর ৭.৫ কিমি. দক্ষিণ-পূর্বে এবং লের শ্রীনগর-লাদাখ রোডের ২৬.৫ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত।শ্রীনগর-লেহ মূল সড়ক দিয়ে গেলে খুব সহজেই এই পাহাড়টি দেখতে পাবেন এবং সড়কটিও এই পাহাড়ের উপর দিয়েই গেছে। চমৎকার সৌন্দর্যের এই সড়কে দিয়ে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষ করতে পারবেন অদ্ভুত এক ব্যাপার। লাদাখের এই পাহাড়কে ‘চুম্বক পাহাড়’ বলে ডাকা হয়। না, এর সেই কিংবদন্তির সামুদ্রিক পাহাড়ের মতো বিধ্বংসী ক্ষমতা নেই। এ যেটা করে থাকে, সেটাও কম আশ্চর্যের নয়। এই পাহাড়ের চূড়ার দিকে যে সড়ক গিয়েছে তা বরাবর গাড়ি চালিয়ে যেতে যেতে যদি কেউ গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দেন এবং গিয়ারকে নিউট্রাল পজিশনে রাখেন, তবে দেখ যাবে সেই গাড়ি খাড়া রাস্তা বেয়ে নিজে নিজেই চলতে শুরু করেছে। এবং তার গতি নেহাত মন্দ নয়। ২০ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টা বেগে সেই গাড়ি উপর দিকে ধাবিত হতে থাকবে। এহেন মজার কারণে ‘ম্যাগনেটিক হিল’ আজ একটি জনপ্রিয় পর্যটনক্ষেত্র।

                এই চুম্বক পাহাড় নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা গল্পকথা চালু রয়েছে। কেউ কেউ এসব ঘটনার মধ্যে ঐশ্বরিক বা অতিপ্রাকৃত শক্তির প্রভাব আছে বলে মনে করে থাকেন। লেহ থেকে কারগিলের সড়ক পথে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়াতে লাদাখ প্রশাসন ওই সড়কটির দুই প্রান্তে বর্তমানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড বসিয়েছে।
            স্থানীয়দের বিশ্বাস, রাজধানী লে-র কাছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১,০০০ ফিট উঁচু এই পাহাড়ে রয়েছে তীব্র চৌম্বকশক্তি। তার টানেই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠে যায় বন্ধ গাড়ি। বাস্তবে কিন্তু ওই পাহাড়ে এমন কোনও চৌম্বকশক্তির অস্তিত্ব নেই। ওই এলাকায় যা ঘটে, তা একেবারেই দৃষ্টিভ্রম। চুম্বক পাহাড় আসলে ভারতের লাদাখের লে-র কাছে অবস্থিত একচক্ষু দৈত্যের মতো দেখতে এক পাহাড়। এই এলাকার বিন্যাস এবং চারপাশের ঢাল একটা পাহাড়ের আলোক-বিভ্রম তৈরি করে। এখানকার পাহাড়ি রাস্তা আসলে একটা নিম্নগামী পাহাড়ি রাস্তা। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধতায় এই রাস্তায় থাকা  বস্তুসমূহ ও গাড়িগুলি ঢালু পথ বেয়ে নামার সময় মনে হয় যেন তারা পাহাড়ের গা বেয়ে উপরের দিকে উঠছে।

তথ্যসূত্র:
1. https://ebela.in
2. https://labanglatimes.com
3. https://dailyhunt.in
4. https://www.anandabazar.com
5. www.eisamay.indiatimes.com
6. https://bn.m.wikipedia.org

লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্বর্ণরেনুর নদী সুবর্ণরেখা (Subarnarekha River)

সুবর্ণরেখা নদী
উৎস: ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ছোটনাগপুর মালভূমিতে রাঁচির নিকট
অববাহিকা: ঝাড়খণ্ড পশ্চিমবঙ্গ ওড়িশা
মোহনা: বঙ্গোপসাগর
দৈর্ঘ্য: ৩৯৫ কিলোমিটার (২৪৫ মাইল)
অববাহিকার দৈর্ঘ্য : ১৮,৯৫১ বর্গকিলোমিটার  (৭,৩১৭ বর্গ মাইল )
উপনদী :
বাম তীরের উপনদী - ডুলাং।
ডান তীরের উপনদী - কাঞ্চি, খারকাই, Raru River, Garru River


সুবর্ণরেখা নদী রাঁচির কাছে হুডু জলপ্রপাত থেকে উৎপন্ন হয়ে ঝাড়খন্ডের সিঙভূম জেলার মধ্যে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা হয়ে ঊড়িষায় প্রবেশ করে। ঊড়িষ্যার রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ঊড়িষার তালসারি এর কাছে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।এই নদীর মোট দৈর্ঘ্য হল ৩৯৫ কিমি।

সুবর্ণরেখা নদীর গতিপথে  রয়েছে বেশ কয়েকটি উপনদী। এর বাম তীরের উপনদী হল - ডুলাং। ডান তীরের উপনদী গুলি হল - কাঞ্চি, খারকাই, Raru River, Garru River


এই নদীতীরের বালুচরে অনেক সময় স্বর্ণরেনু পাওয়া যায়। সেই কারনে নদীটিকে সুবর্ণরেখা বলা হয়, অর্থাৎ সোনার রেখা।
ঝাড়খণ্ডের সুবর্ণরেখা নদী এর উৎপত্তি রাঁচির পিসকা গ্রাম থেকে। কথিত আছে একসময় নাকি এই গ্রামে সোনার খনি ছিল সেই জন্যই এই নদীর নাম সুবর্ণরেখা আর সেই খনি থেকে সোনা নদীতে মিশে যায়। বর্ষার পর সুবর্ণরেখা জল কমে গেলে তীরে নাকি সোনার টুকরো পরে থাকে এমনও শোনা গেছে। আজও দেখা যায় স্থানীয় মানুষেরা বালি থেকে সোনা খুঁজছেন।
বহু মানুষ নদীর বালি ছেঁকে সোনা অন্বেষন করেন। মূলত এভাবেও অনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে।

সুবর্ণরেখার ডান তীরের উপনদী খারকাই জামশেদপুরের আদিত্যপুর এর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে এ নদী। মাত্র 37 কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদীতে নাকি সোনা পাওয়া যায়। এখানেও স্থানীয় মানুষদের সোনার সন্ধান করতে দেখা যায়। তবে তাদের মতে সারাদিন খোঁজার পর চালের থেকেও ছোট আকারের সোনার টুকরো পাওয়া যায়।

অসংখ্য জাতি, উপজাতি বসবাস করে 'সুবর্ণরেখা' নদীর তীরে তীরে। সোনা সংগ্রহ, মৎস্য আহরণ তাদের উপজীবিকা। রাঁচির কাছে হুডু বা হুড্রু জলপ্রপাতটি অবস্থিত । এখানে প্রতিবছর বহু পর্যটক আসে জলপ্রপাতটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এটি রাঁচি তথা ঝাড়খন্ডের বিখ্যাত একটি পর্যটন কেন্দ্র।
বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হুডু জলপ্রপাত ছাড়াও তামা খনি শহর ও স্বাস্থ্যকর নিবাসের জন্য খ্যাত ঘাটশিলা অঞ্চল 'সুবর্ণরেখা'র তীরে অবস্থিত।ঘাটশিলা অপর একটি পরিচিত পর্যটন স্থান। 'সুবর্ণরেখা'র তীর ঘেঁষে আরও রয়েছে গ্রামীণ ও আদিবাসী জনপদের অকৃতিম বহুবিচিত্র সংস্কৃতি। 

পাণ্ডবদের পিতৃতর্পণের স্মৃতিতে সুবর্ণরেখা তীরে বসে  বালিযাত্রা মেলা। সুবর্ণরেখা নদী যেখানে বাংলা থেকে ওড়িশায় ঢুকেছে সেই সব স্থান থেকে ৬০-৬২ কিলোমিটার দূরে করবনিয়ার মূল বালিযাত্রার স্থানে সকলে আসতে পারেন না বলে নদীর তীরে নানা স্থানে ছোট ছোট বালিযাত্রা মেলা হয়। দাঁতনের গরতপুর, সোনাকানিয়া এবং বেলমূলাতে, কেশিয়াড়ির ভসরাঘাটে এবং ওড়িশার জলেশ্বরের রাজঘাট ও মাকড়িয়ায় সুবর্ণরেখা নদীর তীরে চৈত্র সংক্রান্তির দিনেই বালিযাত্রা মেলা বসে।

তথ্যসূত্র:
1. www.newsg24.com
2. আনন্দবাজার পত্রিকা
3. www.barta24.com
4. www.wikipedia.org

লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য উদ্ভিদ : ছাতিম গাছ( West Bengal State Tree)

        ছাতিম গাছ (ইংরেজি: Blackboard Tree) “অ্যাপোসাইনেসি” বর্গের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ  যার বৈজ্ঞানিক নাম:   Alstonia scholaris। পুরাকালে ছাতিমের কাঠ দিয়ে শিশুদের লেখার জন্য তক্তা বানান হত। মনে করা হয় সেই কারণেই বৈজ্ঞানিক নামে “এলস্টোনিআ”-এর পর “স্কলারিস” কথাটি যোগ করা হয়েছে। ছাতিম গাছে সাতটি পাতা এক সঙ্গে থাকে বলে সংস্কৃত ভাষায় একে 'সপ্তপর্ণ' বা 'সপ্তপর্ণা' নামে ডাকা হয়।ছাতিম গাছ হল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য উদ্ভিদ।
        শরতের এ সময়ে গাছজুড়ে শুধু ফুল আর ফুল। সাদা ফুলে পুরো গাছ ঢেকে থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকেই এ গাছের ফুলের ঘ্রাণ ছড়াতে থাকে।


        ছাতিম গাছ ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বহুশাখা বিশিষ্ট গাছটির ছাল গন্ধহীন, অসমতল ও ধুসর। ছাতিম পাতার উপরের দিক চকচকে আর তলার দিক ধূসর থাকে।এর শাখা পত্রমূলাবর্ত বিশিষ্ট। ১০ থেকে ১৫ সে. মি. লম্বা পাতা একই মূলাবর্তে ৪ থেকে ৭ টা পর্যন্ত থাকে। শাখার শীর্ষে সবুজ মেশানো সাদা রংয়ে থোকায় থোকায় ক্ষুদ্রাকৃতি ফুল ফোঁটে। ৩০ থেকে ৬০ সে.মি. লম্বা সরু ফল এক বৃন্তে সাধারণতঃ দুটো ক’রে ঝুলে থাকে। ছাতিমের বীজ লম্বাটে ডিম্বাকার, কিনারায় আঁশ থাকে আর শেষ প্রান্তে এক গোছা চুল থাকে। ছাতিম গাছের অভ্যন্তরে দুধের মতন সাদা এবং অত্যন্ত তেতো কষ প্রচুর পরিমাণে থাকে।

        এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। ক্রান্তীয় অঞ্চলের এই গাছটি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র জন্মে। আর্দ্র, কর্দমাক্ত, জলসিক্ত স্থানে ছাতিম বেশি জন্মে। ভারতীয় উপমহাদেশের: বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকার, পাকিস্তান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া: কম্বোডিয়া, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাপুয়া-নিউগিনি , ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়ার (কুইন্সল্যান্ড), চীনের (গুয়াংজি, ইউনান) I এছাড়াও অন্যান্য অনেক ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলেও গাছটি পরবর্তীতে বিস্তার লাভ করেছে। এটি পশ্চিমবঙ্গের 'প্রাদেশিক বৃক্ষ'রূপে ঘোষিত হয়েছে।

        ছাতিমের কষ অনেকে ওষুধরূপে ঘা বা ক্ষতে লাগিয়ে থাকেন। ছাতিম গাছের বাকল বা ছাল শুকিয়ে নিয়ে ওষুধের কাজে ব্যবহার করা হয়। চর্মরোগেও ছাতিম ফলপ্রদ। স্নায়ুর শক্তিসূত্রে অসাড়তা আনে বলে রক্তের চাপ কমাতে ছাতিম উপকারী।

        ছাতিমের কাঠ দিয়ে খুব সাধারণ মানের আসবাবপত্র, প্যাকিং কেস, চায়ের পেটি, পেনসিল এবং দেশলাইযের কাঠি তৈরী হয়। ছাতিমের হালকা কাঠ দিয়ে শ্রীলংকায় কফিন  বানানো হয়। এছাড়া এটি দিয়ে চামচ, কর্ক ইত্যাদি বানানো হয়।

        এক সময় গ্রামের রাস্তার পাশে, বনে-জঙ্গলে অহরহ এই গাছ থাকলেও বর্তমানে খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না। দূর থেকে ভেসে আসা সুগন্ধ শুঁকে গাছটিকে খুঁজে নিতে হয়। নির্বিচারে গাছ কেটে বিক্রি করা বা বসতবাড়ি নির্মাণের ফলে অন্যান্য গাছের সঙ্গে উজার হতে হতে এখন এই ছাতিম গাছ খুব একটা দেখা যায় না।

        পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে বাইপাসের দু'দিকে  ছাতিম গাছের বাগান গড়েছিল কেএমডিএ। দূষণ মোকাবিলার জন্যই গাছ লাগানো হয়েছে। সেখান থেকে গাছগুলি চুরি হয়েছে। কিন্তু এই হারে তা চুরি ও নির্বিচারে গাছ কেটে বিক্রি করা হলে সেই উদ্দেশ্য কতখানি সফল হবে, সে ব্যাপারে উঠছে প্রশ্ন।

তথ্যসূত্র:
1) www.eisamay.indiatimes.com
2) www.banglanews24.com
3) www.wikipedia.org


লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বা রাষ্ট্রীয় ফুল শিউলি (West Bengal State Flower)

            শিউলি ফুল বৈজ্ঞানিক নাম: Nyctanthes arbor-tristis) শিউলি নিক্টান্থেস (Nyctanthes) প্রজাতির  একটি ফুল। লাতিন Nyctanthes-এর অর্থ হচ্ছে “সন্ধ্যায় ফোটা” এবং arbor-tristis-এর মানে হচ্ছে “বিষণ্ন গাছ”। শিউলিকে কখনও কখনও "tree of sorrow" বা "দুঃখের বৃক্ষ"-ও বলা হয় কারণ দিনের আলোতে এই ফুল তাদের উজ্জ্বলতা হারায়।

           শিউলি ফুল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি, রাজ্য প্রতীক বা রাষ্ট্রীয় ফুল।

        শিউলি ফুলের প্রচলিত নাম গুলি হল -- নাইট ফ্লাওয়ার জেসমিন(Night-flowering Jasmine), হারসিঙ্গার (Harsingar), কোরাল জেসমিন, পারিজাত, শেফালিকা, পারিজাতা, পারিজাতাকা, রাগাপুস্পি, খারাপাত্রাকা, প্রজক্তা।
এটি দক্ষিণ এশিয়ার  দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড  থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল, ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকা জুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। এটি শেফালী নামেও পরিচিত। এই ফুল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের  রাজ্য ফুল ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের প্রাদেশিক ফুল।

        শিউলি গাছ নরম ধূসর ছাল বা বাকল  বিশিষ্ট হয় এবং ১০ মিটারের মত লম্বা হয়। গাছের পাতা গুলো ৬-৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও সমান্তরাল প্রান্তের বিপরীতমুখী থাকে। সুগন্ধি জাতীয় এই ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মত বৃন্ত। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামী হৃদপিণ্ডাকৃতির। ফলের ব্যাস ২ সেন্টিমিটার এবং এটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে একটি করে বীজ থাকে। এই ফুল শরৎকালে ফোটে। ফুলগুলি রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে এই ফুলকে দুর্গা পূজার আগমনি ফুুলের
মর্যাদা দিয়েছে।

        শিউলি গাছ ও পাতার মধ্যে আছে বহু গুণাগুণ। যা, আমাদের শারীরিক উপকারে লাগে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিউলির নির্যাস সাধারণত রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে।ফলে, রোগ প্রতিরোধ হয়। এর পাতা স্বাদে তেতো। এ জন্য পাতার রস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। ঠাণ্ডা ও কাশির জন্যও এ পাতার রস উপকারী। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এ দুটি উপাদান রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া মাথার খুশকি দূর করতে শিউলির বীজের তেল বেশ উপকারী।

তথ্যসূত্র:
1. www.wikipedia.org
2. www.kalerkantho.com



লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Saturday, 13 June 2020

পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রীয় পাখি (West Bengal State Bird)


    

        লাগলা মাছরাঙা বৈজ্ঞানিক নাম: Halcyon smyrnensis  হ্যালসায়নিডি (Halcyonidae) গোত্র  বা পরিবারের  অন্তর্গত হ্যালসায়ন (Halcyon) গণের  অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির  গেছো মাছরাঙা।

        ধলাগলা মাছরাঙা সাদা গলার বিশ্বজনীন মাছরাঙা (দৈর্ঘ্য ২৮ সেমি, ডানা ১১.৮ সেমি, ঠোঁট ৬ সেমি, পা ১.৬ সেমি, লেজ ৭.৫ সেমি)। পূর্ণবয়স্ক পাখির পিঠ নীলকান্তমণি-নীল ও দেহতল চকলেট-বাদামি। মাথা ও ঘাড় চকলেট-বাদামি এবং পাছা ও লেজসহ পিঠ উজ্জ্বল নীলকান্তমণি-নীল। থুতনি, গলা ও বুকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিস্তৃত উজ্জ্বল সাদা রঙ সামনে স্পষ্ট জামার গঠন লাভ করেছে। ওড়ার সময় কালো প্রাথমিক পালকের গোড়ার সাদা পট্টি নজরে আসে। ঠোঁট লাল ও মুখ কমলা রঙের। চোখ বাদামি। উজ্জ্বল পিছনের পা ও পদতলসহ পা ও পায়ের পাতা প্রবাল-লাল।

        ধলাগলা মাছরাঙা বনের প্রান্তদেশ, আবাদি জমি, বাগান, শুষ্ক পাতাঝরা বন, জলাধার, নদী, খাল, ডোবা, গ্রামের পুষ্করিণী, নর্দমা, উপকূল ও প্যারাবনে বিচরণ করে; সাধারণত একা বা আলাদা জোড়ায় দেখা যায়। বেড়া, বৈদ্যুতিক তার বা গাছের ডালে বসে মাটিতে বা জলে শিকার পর্যবেক্ষণ করে। খাবারের বেশীর ভাগই পোকামাকড়: ফড়িং, ঝিঁঝিঁপোকা, গুবরে পোকা, পিঁপড়া, ডানাওয়ালা উই, পঙ্গপাল ও অন্য ধরনের ফড়িং। ওড়ার সময় উচ্চ সুরে ডাকে: কে-কে-কেক..; এবং শিস্ দিয়ে গান গায়: কিলিলিলি…। মার্চ-জুন প্রজনন ঋতু। খাড়া পাড়ে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানায় ও মেয়েপাখি ৪-৭টি ডিম পাড়ে। ডিম সাদা গোল ডিম্বাকার, মাপ ২.৯ × ২.৬ সেমি।


        ধলাগলা মাছরাঙা সকল জলাশয় ও পল্লী এলাকায় বিচরণ করে। পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত  ছাড়াও দক্ষিণ  ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার  বিভিন্ন দেশে -  পাকিস্তান, নেপাল,  ভূটান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে দেখা যায়। ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য তুরস্ক  ও বুলগেরিয়াতেও এদের বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায়।

        ধলাগলা মাছরাঙার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ স্মির্নার মাছরাঙা (গ্রিক: halkuon = মাছরাঙার সঙ্গে সম্পর্কিত পৌরাণিক পাখি, smyrnrnsis = স্মির্না শহর, তুরস্ক)। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৭১ লক্ষ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।

        ধলাগলা মাছরাঙা বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত হলেও বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমছে। তবে দুনিয়ায় এখন 10000 এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছায়নি। সেই কারণে আই. ইউ. সি. এন এই  প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপর্যস্ত  বলে ঘোষণা করেছে।

****************************
তথ্যসূত্র:
1) www.roddure.com
2) https://bn.m.wikipedia.org


লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Thursday, 11 June 2020

পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রীয় পশু (West Bengal State Animal)



        মেছোবাঘ, বাঘরোল বা মেছো বিড়াল (ইংরেজি: Fishing Cat),বৈজ্ঞানিক নাম:Prionailurus viverrinus মাঝারি আকারের বিড়ালগোত্রীয় একধরনের স্তন্যপায়ী মাংসাশী বন্যপ্রাণী।
        চেহারায় সাধারন বিড়ালের প্রায় দ্বিগুন, ছাই রঙের খরখরে লোমশ শরীর। মাথা থেকে কাধের দিকে লম্বা টানা ডোরা, শরীরের পাশের দিকটায় আবার ছোপ ছোপ। ডোরা আছে মুখে, পেটের দিকটা সাদাটে। সাধারনত নিশাচর এবং জলাশয়ের কাছাকাছি অঞ্চলে বসবাসকারী। এই প্রাণীই বাংলার ‘স্টেট অ্যানিম্যাল’। অর্থাত পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রীয় পশু।

        ব্রাজিল, কোস্টারিকা, বাংলাদেশ, ভারত, বলিভিয়া, ক্যাম্বোডিয়া, লাউস, শ্রীলঙ্কায়  এরা স্থানীয়ভাবে বাঘরোল নামে পরিচিত। বাঘরোল সাধারণত নদীর ধারে, পাহাড়ি ছড়া এবং জলাভূমিতে বাস করে। এরা সাঁতারে পারদর্শী হ‌ওয়ায় এধরনের পরিবেশে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। এদের গায়ে ছোপ ছোপ চিহ্ন থাকার জন্য চিতাবাঘ বলেও ভুল করা হয়।

        বিগত কয়েক দশকে বাঘরোলের সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।জনবসতি স্থাপন, কৃষিজমিতে রূপান্তর ও অন্যান্য কারণে বাঘরোলের আবাসস্থল জলাভূমিগুলো দিন দিন সংকুচিত ও হ্রাস পাওয়াই এর মূল কারণ। তাই আইইউসিএন ২০০৮ সালে মেছোবাঘকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে।

        রাজ্য-প্রাণী হিসাবে তকমা পেয়েছে সে। কিন্তু তাতে নিরাপত্তা তো বাড়েনি। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মাঝে মধ্যেই বাঘরোল পিটিয়ে মারার কথা শোনা যায়। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য-প্রাণীর তকমা জুটলেও তাদের খাদ্য ও বাসস্থান নিয়ে সরকারি স্তরে চিন্তাভাবনা কতটা করা হচ্ছে, আদৌ করা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে বারে বারেই।
******************************************

তথ্যসূত্র :
1. https://bn.m.wikipedia.org
2. আনন্দবাজার পত্রিকা


লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।