Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Saturday, 14 September 2019

ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ও শিক্ষক দিবস




            শিক্ষক আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষক ছাড়া যোগ্য সমাজ ও উজ্জ্বল জীবন কল্পনাতীত। প্রতি বছর ৫ই সেপটেম্বর আমরা শিক্ষক দিবস পালন করি এবং আজকের দিনেই ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

        ১৯৬২-এ প্রথম বার ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়েছিল। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন, উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের দূত ছিলেন, কিন্তু সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক এবং দার্শনিক।

        বর্তমান তামিলনাড়ু এবং তৎকালীন মাদ্রাজ প্রদেশের তিরুতান্নিতে এক গরিব ব্রাহ্মণ পরিবারে ১৮৮৮-এর ৫ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ [ ৫ সেপ্টেম্বর,১৮৮৮ - 17ই এপ্রিল 1975 ]। ছেলে পূজারি হোক, এমনটাই চাইতেন তাঁর বাবা। বাবা কখনোই চাননি ছেলে ইংরেজি পড়ুক। কিন্তু রাধাকৃষ্ণনের জেদে পরাজিত হন তাঁর বাবা। তিরুপতির একটি স্কুলে তাঁকে ভর্তি করা হয়। এই শান্ত মানুষটি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন। জীবনে কোন পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। বিভিন্ন বৃত্তির মাধ্যমে তার ছাত্র জীবন এগিয়ে চলে।

        মেধাবী ছাত্র হওয়ার ফলে, স্কুল জীবনে অসংখ্য স্কলারশিপ পেয়েছেন রাধাকৃষ্ণণ । প্রথমে ভেলোরের ভুরহি কলেজে ভর্তি হলেও, পরে মাদ্রাজ ক্রিশ্চান কলেজে ভর্তি হন তিনি। তাঁর বিষয় ছিল দর্শন। কিন্তু দর্শন তাঁর প্রথম পছন্দের বিষয় ছিল না। বই কেনার টাকা ছিল না রাধাকৃষ্ণণের। কিন্তু সেই সময়েই একই কলেজ থেকে দর্শন নিয়ে স্নাতক হন তাঁর এক দাদা। দাদার বইয়ের জন্যই দর্শনকে বেছে নেন তিনি বিষয় হিসেবে।

        ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’(The Ethics of the Vedanta and its Metaphysical Presuppositions) বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি "বেদান্ত দর্শনের বিমুর্ত পূর্বকল্পনা " (The Ethics of the Vedanta and its metaphysical Presuppositions) বিষয়ে একটি গবেষণা মূলক প্রবন্ধ লেখেন। তিনি ভেবেছিলেন তার  গবেষণামূলক প্রবন্ধ দর্শনের অধ্যাপক বাতিল করে দেবেন। কিন্তু অধ্যাপক অ্যালফ্রেড জর্জ হগ তার প্রবন্ধ পড়ে খুবই খুশি হন। এই প্রবন্ধ যখন ছাপানো হয় তখন রাধাকৃষ্ণাণ এর বয়স ২০ বছর।
প্রথম জীবনে তিনি মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন (১৯১৮)। এসময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখতেন। সে সময়েই তিনি লেখেন তার প্রথম গ্রন্থ ‘The Philosophy of Rabindranath Tagore’। দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘The Reign of Religion in Contemporary Philosophy’প্রকাশিত হয় ১৯২০সালে। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। দেশ–বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বারবার অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন। অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি।
          
           ছাত্রছাত্রীদের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন রাধাকৃষ্ণণ । মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনার উদ্দেশে যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিচ্ছেন অধ্যাপক রাধাকৃষ্ণন, তখন তাঁর পড়ুয়ারা, ফুলসজ্জিত গাড়ির ব্যবস্থা করে, তাঁকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল।

            বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাকে British knighthood-এ সম্মানিত করা হয়। ১৯৫৪ সালে তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন' দেওয়া হয়। ২৭ বার নোবেলের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে ১৬ বার সাহিত্য ও ১১ বার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য।

            মাত্র ১৬ বয়সে,  তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয়া শিবাকামুকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯৫৬য় তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়।

            তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (১৯৫২-১৯৬২) হন। ১৯৫৭-য় রাষ্ট্রপতি হিসেবে ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের কার্যকাল শেষ হওয়ার পর, রাধাকৃষ্ণনকেই রাষ্ট্রপতি করতে চেয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। কিন্তু মৌলানা আজাদের তীব্র বিরোধিতায় সেটা হয়নি। ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ আরও পাঁচ বছর থাকেন। ১৯৬২-তে নেহরুর সক্রিয়তায় ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হন রাধাকৃষ্ণন (১৯৬২-৬৭) । কিন্তু তার আগে, অর্থাৎ ১৯৪৬-এ ইউনেস্কোর দূত হয়েছিলেন তিনি। এর পর সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের দূতও ছিলেন তিনি।

            শিক্ষাজগতে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন, ভারতে একজন দার্শনিকের কাজ অতীতকে ছুঁয়ে ভবিষ্যৎ পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর শিক্ষকতায় মুগ্ধ ছিল। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর পড়ুয়াদের দাবি ছিল তাঁর জন্মদিনটা যেন বিশেষ ভাবে উদযাপন করা হয়। রাধাকৃষ্ণন বলেছিলেন, “জন্মদিন উদযাপন না করে সেই দিনটা যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়, তা হলে আমি কৃতজ্ঞ থাকবে।” সেই থেকে ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের শিক্ষক দিবস।



            ১৯৭৫-এর ১৭ এপ্রিল পরলোকের উদ্দেশে যাত্রা করেন রাধাকৃষ্ণন। তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬২ সালে ছাত্রদের অনুরোধে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন প্রথম শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠান পালন করার অনুপ্রেরণা দেন। তিনি ছিলেন একজন বিদ্বান ব্যক্তি ও উপদেষ্টা। ভারতবর্ষের সকল বিদ্যার্থী তাকে সম্মান জানানোর জন্য আজকের দিনে শিক্ষক দিবস পালন করে থাকে।


তথ্যসূত্র :
1) https://bn.m.wikipedia.org/wiki/সর্বপল্লী_রাধাকৃষ্ণণ
2) https://www.google.com/amp/s/www.khaboronline.com/news/national/ten-facts-about-dr-sarvapalli-radhakrishnan/%3famp
3) www.google.com


লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"বাথনা কৃত্তিবাস"




         জকের লেখার বিষয়টা একটু অন্যরকম। তবে যা লিখছি তা পুরোপুরি ভাবে "বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশন তৈরির পেছনের ইতিহাস , যা শিয়ালদহ থেকে শান্তিপুর লাইনের একটি রেল স্টেশন । বর্তমান ফুলিয়া স্টেশন এবং শান্তিপুর স্টেশনের মধ্যবর্তী স্টেশন।
এই লেখার পেছনে বেশিরভাগ তথ্যই দিয়েছেন "বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশনের একমাত্র কর্মী সত্যপ্রিয় দাস , যিনি সর্বপ্রথম এবং বর্তমানের টিকিট কাউন্টারে কর্মী। তিনি ছিলেন শান্তিপুর কলেজের B. Com এর ছাত্র। আর এই "বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশন তৈরীর পিছনের এক মূল ব্যক্তিত্ব বা আন্দোলনকারী (আবেদনকারী)।
"বাথনা কৃত্তিবাস" স্টেশন তৈরির পটভূমিকা রচিত হয়েছিল ১৯৭৯ সালের এক আন্দোলনের মাধ্যমে। এই আন্দোলন শুরু করেছিল 'বাথনা রেল স্টেশন দাবি কমিটি' । তাদের পতাকার রং ছিল সাদা । তখন বাথনা অঞ্চল ছিল বেলঘড়িয়া পঞ্চায়েত এর মধ্যে । এই কমিটির সক্রিয় কর্মী ছিলেন মন্টু ঠাকুর (যিনি সভাপতি ছিলেন প্রবীণ হওয়ার কারণে) এছাড়াও ছিলেন গোপাল মন্ডল , বলাই দাশ , সত্যপ্রিয় দাস সহ প্রায় 500 জন সাধারণ নাগরিক। তাদের আন্দোলন চলেছিল প্রায় 17 বছর । তারপর M.P(Member of parliament) অসীম বালা মহাশয়ের সহযোগিতায় ও M.L.A(Member of the legislative assembly) অজয় দে মহাশয়ের সহায়তায় এবং D.R.M(Divisional railway manager)এর সক্রিয়তার ফলস্বরূপ তৈরি হয় "বাথনা কৃত্তিবাস"স্টেশন। স্টেশনের ভীত ও দেওয়াল রেল কর্তৃপক্ষ করে দিলেও তাতে মাটি ফেলার দায়িত্ব নিতে হয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের । তাই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই স্বেচ্ছায় শ্রম দান করে। যার মধ্যে আমার বাবাও একজন ছিলেন। তারা সকলেই স্টেশন এর পাশের জমিতে লম্বা গর্ত করে সেই মাটি নিয়ে স্টেশনের পাশে গিয়ে স্টেশন থেকে উঁচু করে তোলে। এই স্টেশনে প্রথম ট্রেন থেমেছিল ১৯৯৬ সালের ১৪ ই জানুয়ারি (২৯ শে পৌষ ১৪০২বঙ্গাব্দ) । প্রথম প্রথম এই স্টেশনে চারটে ট্রেন থামতো । সকালের ছিল দুটো ট্রেন ও বৈকালের ছিল দুটো ট্রেন। আর তৎকালীন সময় থেকেই স্টেশনের একমাত্র কর্মী হয়ে আছেন সত্যপ্রিয় দাস মহাশয়।




নামকরণের ইতিহাস :
এই স্টেশন যেখানে তৈরি হয় বাথনার পার্শ্ববর্তী (নিকটবর্তী অঞ্চলও বলা চলে) তবে বর্তমানে যেখানে স্টেশনটি আছে তা ঘোড়ালিয়া মৌজার অভ্যন্তরে। এই স্টেশনের নাম প্রথম বাথনা রাখার পরিকল্পনা করা হলেও D.R.M office থেকে জানানো হয় যে বিহারে "Bathnaha station" নামক একটি স্টেশন আছে তাই এই নামের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না। তারপর পরিকল্পনা নেওয়া হয় বাথনা স্টেশন এর সাথে অদ্বৈত পাট এর নাম যোগ করা হবে তখন D.R.M অফিসের অফিসার মহাশয় বলেন এটা বহু বড় হয়ে যাচ্ছে তাই নামটি ছোট করতে হবে।তখন বহু ভাবনা-চিন্তার পর " বাংলা রামায়ণের রচয়িতা" কৃত্তিবাস ওঝার নামানুসারে এই স্টেশনের নাম রাখা হয় "বাথনা কৃত্তিবাস"। সত্যপ্রিয় দাসের মতামত অনুযায়ী, তারা আরেকটি নামের অনুসন্ধান করেছিল যার নাম ছিল নিউ বাথনা তবে যেহেতু তৎকালীন সময়ের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল "বাথনা কৃত্তিবাস" নামটি তাই তা আর পরিবর্তন করা হয়ে ওঠেনি।
আর বর্তমানে আমরা এই "বাথনা স্টেশনে"র দুটি প্লাটফর্মের চারিপাশে বেশ কতকগুলি গাছ লাগানোর মাধ্যমে এই স্টেশনটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক প্রবল দাবিদার হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছি। বর্তমানে এই স্টেশনে প্রায় 16 টিরও বেশি ট্রেন থামে তাই এই স্টেশনটি আমাদের এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার এক বিশেষ মাধ্যমে হয়ে উঠেছে।
আর শেষে বলা যায় যে, স্টেশনে এখনও পর্যন্ত ""প্লাস্টিক"" ব্যবহার প্রায় হয়না ( হয়তো একটি পরিবারও একদিনে এই স্টেশনের তুলনায় বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করে)। আর এই স্টেশন এখনো পর্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঠাসা।
লিখছি আমিই( তুহিন শুভ্র) তবে বক্তব্য অনেকের ।


 

তথ্য সূত্র : সত্যপ্রিয় দাস, আঞ্চলিক বাসিন্দা ও আমার বাবা।
চিত্র : তুহিন শুভ্র বিশ্বাস


লেখক:
তুহিন শুভ্র বিশ্বাস
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।

© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Saturday, 7 September 2019

ঘোড়ালিয়া ( Ghoralia)

*আদমশুমারি শহর বা Census Town : ঘোড়ালিয়া* 

ঘোড়ালিয়া  পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাট মহকুমার শান্তিপুর সিডি ব্লকের একটি আদমশুমারি শহর বা Census Town। এর ভৌগোলিক অবস্থান হল  23.2433 ° উত্তর 88.4587 ° পূর্ব।



 জেলা আদমশুমারি হ্যান্ডবুক ২০১১ নদীয়াতে, শান্তিপুর সিডি ব্লকের মানচিত্রে ঘোড়ালিয়া এবং বেহারিয়াকে শান্তিপুর এবং ফুলিয়ার মধ্যবর্তী আদমশুমারি শহর হিসেবে দেখানো হয়েছে।

২০১১ সালের ভারতের আদমশুমারি অনুসারে, ঘোড়ালিয়ার মোট জনসংখ্যা ৫,২৬৮ জন, যার মধ্যে ২,৭৭৬ জন (৫৩%) পুরুষ এবং ২,৪৯২ (৪৭%) মহিলা। ০-৬ বছর বয়সের মধ্যে জনসংখ্যা ছিল ৪৪১। অঞ্চলটির জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৭০০ জন।

 নদীয়া জেলা আদমশুমারি হ্যান্ডবুক ২০১১ অনুযায়ী, ঘোরালিয়া মোট আয়তন  ১.৯৫০৮ বর্গকিলোমিটার।  
উল্লেখযোগ্য নাগরিক সুবিধার মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত জল সরবরাহের সাথে হ্যান্ড পাম্প, নলকূপ, বোরওয়েল। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা খোলা ড্রেন, ৫২৩ টি বাড়িতে ঘরোয়া (Domestic) বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল। চিকিৎসা সুবিধার মধ্যে ১ টি প্রসূতি ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ১ টি মোবাইল স্বাস্থ্য ক্লিনিক। শিক্ষাগত সুবিধার মধ্যে  রয়েছে ২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ টি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে উৎপাদিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পন্য হল শাড়ি। এখানে ১ টি জাতীয়ীকৃত ( Nationalised) ব্যাংক, ১ টি কৃষি  ঋণ সমিতির শাখা অফিস আছে।

পরিবহন বাথনা কৃত্তিবাস রেলওয়ে স্টেশন, রানাঘাট-শান্তিপুর শাখা লাইনে, কলকাতা শহরতলী রেলওয়ে ব্যবস্থার একটি হোল্ট রেলওয়ে স্টেশন, কাছাকাছি অবস্থিত।


 আদমশুমারি শহর বা Census Town : ঘোড়ালিয়া(CT) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপরের বইটি সংগ্রহ করুন
 
 

তথ্যসূত্র:

1. https://wikipedia.org

2. Census report 2011

©
GEO HUB
(Enhance Your Geo Knowledge)
Ghoralia, Santipur, Nadia.
..............................
GEO HUB এর লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ।
 

Sunday, 28 April 2019

এশিয়া




 পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ, প্রাথমিকভাবে পূর্ব ও উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এটি ভূপৃষ্ঠের ৮.৭% ও স্থলভাগের ৩০% অংশ জুড়ে অবস্থিত। আনুমানিক ৪৩০ কোটি মানুষ নিয়ে এশিয়াতে বিশ্বের ৬০%-এরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। অধিকাংশ বিশ্বের মত, আধুনিক যুগে এশিয়ার বৃদ্ধির হার উচ্চ। উদাহরণস্বরূপ, বিংশ শতাব্দীর সময়, এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে, বিশ্ব জনসংখ্যার মত।
 
 
এশিয়ার সীমানা সাংস্কৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়, যেহেতু ইউরোপের সাথে এর কোনো স্পষ্ট ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা নেই, যা এক অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের গঠন যাকে একসঙ্গে ইউরেশিয়া বলা হয়। এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সীমানা হলো সুয়েজ খাল, ইউরাল নদী, এবং ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, এবং ককেশাস পর্বতমালা এবং কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। ইউরাল পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান সাগর, কৃষ্ণসাগর এবং ভূমধ্যসাগর দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশকে আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সংকীর্ণ বেরিং প্রণালী একে উত্তর আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে। উল্লেখ্য, বেরিং প্রণালীর একদিকে অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত রাশিয়ার উলেনা এবং অপর পাশে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। এই প্রণালীটির সংকীর্ণতম অংশটি মাত্র ৮২ কিমি চওড়া, অর্থাৎ বেরিং প্রণালীর এই অংশ হতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দূরত্ব মাত্র ৮২ কিমি।

এর আকার এবং বৈচিত্র্যের দ্বারা, এশিয়ার ধারণা – একটি নাম ধ্রুপদি সভ্যতায় পাওয়া যায় - আসলে ভৌত ভূগোলের চেয়ে মানবীয় ভূগোলের সাথে আরো বেশি সম্পর্কিত। এশিয়ার অঞ্চল জুড়ে জাতিগোষ্ঠী, সংস্কৃতি, পরিবেশ, অর্থনীতি, ঐতিহাসিক বন্ধন এবং সরকার ব্যবস্থার মাঝে ব্যাপকভাবে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

ভূগোল ও জলবায়ু

এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ। এটা পৃথিবীর মোট ভূপৃষ্ঠের ৮.৮% ভাগ (বা ৩০% ভাগ স্থল), এবং বৃহত্তম তটরেখা ৬২,৮০০ কিলোমিটার (৩৯,০২২ মা)। এশিয়া সাধারণত ইউরেশিয়ার পাঁচ ভাগের চার ভাগ নিয়ে পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটা সুয়েজ খাল ও ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, ককেশাস পর্বতমালা, কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে অবস্থিত। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। এশিয়া মহাদেশে ৪৮টি দেশ আছে, তাদের দুটি (রাশিয়া ও তুরস্ক) দেশের ইউরোপে অংশ আছে।

এশিয়ার অত্যন্ত বিচিত্র জলবায়ু এবং ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য আছে। জলবায়ুর পরিধি আর্কটিক, উপআর্কটিক (সাইবেরিয়া) থেকে দক্ষিণ ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্রান্তীয় অবধি বিস্তৃত। এর দক্ষিণ-পূর্ব অংশ জুড়ে আর্দ্র ও অভ্যন্তরে শুষ্ক। পশ্চিম এশিয়ায় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দৈনিক তাপমাত্রা পরিসর দেখা যায়।হিমালয় পর্বমালার কারণে মৌসুমি সঞ্চালন দক্ষিণ ও পূর্ব অংশ জুড়ে প্রাধান্য পায়। মহাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ উষ্ণ। উত্তর গোলার্ধের মধ্যে সাইবেরিয়া অন্যতম শীতলতম অঞ্চল, এবং উত্তর আমেরিকা জন্য আর্কটিক বায়ুভরের একটি উৎস হিসাবে কাজ করে। ট্রপিকাল সাইক্লোনের জন্য পৃথিবীতে সবচেয়ে সক্রিয় জায়গা উত্তরপূর্বে ফিলিপাইন ও দক্ষিণ জাপান। মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি ও আরব মরুভূমি মধ্যপ্রাচ্যের অনেকটা জুড়ে প্রসারিত। চীনের ইয়ানজে নদী মহাদেশের দীর্ঘতম নদী। নেপাল ও চীনের মধ্যকার হিমালয় পর্বতমালা বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা পর্বতশ্রেণী। বৃষ্টিপ্রধান ক্রান্তীয় বনাঞ্চল দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে প্রসারিত ও সরলবর্গীয়, পর্ণমোচী বনাঞ্চল উত্তরে প্রসারিত।

পর্যটন

মাস্টারকার্ড বৈশ্বিক গন্তব্য শহর সূচক ২০১৩ প্রকাশ করে, যেকানে ২০টি শহরের মধ্যে ১০টি এশিয়ার এবং এশিয়ার কোনো শহর (ব্যাংকক) শীর্ষস্থানীয় অবস্থায় ছিলো, ১৫.৯৮ আন্তর্জাতিক পর্যটক নিয়ে।

জনমিতি

স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আয় তথ্য প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পূর্ব এশিয়া সার্বিক মানব উন্নয়ন সূচকে (এইচডিআই) পৃথিবীর যেকোন অঞ্চলের চেয়ে বেশি উন্নতি সাধন করে, যা গত ৪০ বছরে দ্বিগুণ হয়।

চীন, এইচডিআই উন্নতিতে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্জনকারী ১৯৭০ সাল থেকে, "টপ টেন মুভার্স" তালিকার একমাত্র দেশ যা স্বাস্থ্য বা শিক্ষার সফলতা জন্য নয় আয়ের কারণে। শেষ চার দশকে এর মাথাপিছু আয় অত্যাশ্চর্য ২১ গুণ বেড়ে, লক্ষ লক্ষ মানুষের আয়ের দারিদ্যতা থেকে মুক্তি দেয়। তবুও এটা স্কুল তালিকাভুক্তি এবং প্রত্যাশিত আয়ুতে অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় নয়।

নেপাল, একটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ, প্রধানত কারণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বের দ্রুততম অগ্রসরমান। এর বর্তমান প্রত্যাশিত আয়ু ১৯৭০ সালের তুলনায় ২৫ বছর বেশি। নেপালে প্রতি পাঁচ জন শিশুদের মধ্যে চার জনের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়, যা ৪০ বছর আগে ১ জন ছিলো।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া মানব উন্নয়ন সূচকে সর্বোত্তম (১১ ও ১২ নং, যা "খুব উচ্চ মানব উন্নয়ন" বিভাগে পড়ে), অনুসরণ করে হংকং (২১) ও সিঙ্গাপুর (২১)। আফগানিস্তান (১৫৫) মূল্যায়ন ১৬৯টি দেশ থেকে, যা এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন স্থান।


ভাষাসমূহ

এশিয়া বিভিন্ন ভাষা পরিবার এবং বিচ্ছিন্ন ভাষার আবাস। বেশিরভাগ এশিয়ার দেশগুলোতে স্থানীয়ভাবে একাধিক ভাষায় কথা বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ এথ্‌নোলগ অনুযায়ী, ৬০০-র অধিক ভাষা ইন্দোনেশিয়ায়, ও ৮০০-র অধিক ভাষা ভারতে প্রচলিত। এবং ১০০-এর বেশি ফিলিপাইনে প্রচলিত। চীন বিভিন্ন প্রদেশে অনেক ভাষা এবং উপভাষা রয়েছে।

ধর্ম

বিশ্বের অনেক প্রধান ধর্মের উত্স এশিয়ায়। এশীয় পুরাণ জটিল এবং বিচিত্র। উদাহরণস্বরূপ মহাপ্লাবনের ঘটনা, খ্রিস্টানদের ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত, যা মেসপোটেমিয় পুরাণের প্রথম নিদর্শন। হিন্দু পুরাণে বলা আছে, অবতার বিষ্ণু মাছের বেশে মনুকে একটি ভয়ানক বন্যা সম্পর্কে সতর্ক করে।

প্রাচীন চীনা পুরাণে, শান হ্যায় জিং, চীনা শাসক দা ইউ ১০ বছর অতিবাহিত করে মহাপ্লাবন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, যা প্রাচীন চীনের বেশির ভাগ অঞ্চল প্লাবিত করেছিলো। নুয়া দেবীর সহায়তায় আক্ষরিকভাবেই ভাঙা আকাশ ঠিক করে।

 

এশিয়া

আয়তন৪,৪৫,৭৯,০০০ কিমি (১,৭২,১২,০০০ মা)
জনসংখ্যা৪,১৬৪,২৫২,০০০
জনঘনত্ব৮৭/কিমি (২২৫/বর্গ মাইল)
অধিবাসীদের নামএশিয়ান
দেশসমূহ৪৯ (এবং অমীমাংশিত ৫)











তথ্যসূত্র: https://bn.wikipedia.org/wiki/এশিয়া

©
GEO HUB
(Enhance Your Geo Knowledge)
Ghoralia, Santipur, Nadia.
..............................
GEO HUB এর লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ।