Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Friday, 21 April 2023

২২ শে এপ্রিল, পৃথিবী দিবস (Earth Day)

 আর্থ ডে মানে বিশ্ব দিবস বা পৃথিবী দিবস। অর্থাৎ আমাদের মাতৃ গ্রহ পৃথিবীর জন্য একটি দিবস। বিশ্বব্যাপী কতো দিনই না আমরা উদযাপন করে আসছি বিশেষ বিশেষ দিনে আর আজকে কিনা এই বিশ্বেরই বিশ্ব দিবস! প্রতি বছর এপ্রিলের ২২ তারিখ বিশ্বের মোটামুটি সব দেশেই এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করা হয় বিশ্বের ভালো কিছু করার লক্ষ্যে, উন্নয়নের লক্ষ্যে। প্রতিবছর এই দিনটি পরিবেশ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে পালন করা হয়। Earth Day Network সংস্থার মাধ্যমে বিশ্বের ১৯৩ টিরও বেশি দেশে পৃথিবী দিবস বা ধরিত্রী দিবস পালিত হয়ে থাকে। ১৯৭০ সালের ২২ শে এপ্রিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম পৃথিবী দিবস পালিত হয়। এই এপ্রিলের ২২ তারিখ পৃথিবী বা ধরিত্রী দিবস হিসেবে পালিত হবে এই মতবাদের স্থাপক শ্রদ্ধেয় গেইলর্ড নেলসন। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটর গেলর্ড নেলসন ২২ শে এপ্রিল ১৯৭০ পরিবেশ শিক্ষন কর্মসূচীর মাধ্যমে পৃথিবী দিবসের প্রতিষ্ঠা করেন। যিনি ১৯৭০ সালে প্রথম বাস্তুসংস্থান এবং দুনিয়ার জীবনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা আনার কথা বলেন এবং তিনিই প্রথম মানুষকে মাটি, বাতাস ও জলের যে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিদিন সেই সম্পর্কে ভাবতে, সচেতন হতে সচেষ্ট করেন। সমগ্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এই উদযাপন কর্মসূচীর জাতীয় সংগঠক ছিলেন ড্যানিস হায়েস। ১৯৯০ সালে পৃথিবী দিবস আন্তর্জাতিক রূপ পায় এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। 



এই দিনটির প্রতীক হিসেবে মানুষ বিভিন্ন প্রতীকী চিহ্ন ব্যবহার করে থাকে যেমনঃ ইমেজ বা ড্রইং যা পৃথিবীকে বোঝায়, এছাড়াও গাছ, ফুল বা পাতা যা পরিবেশের পরিচিতি বহন করে। এই দিনের বিশেষ রং হলো বিভিন্ন প্রাকৃতিক রং যেমন- নীল, সবুজ বা ধূসর রং।

কি করে মানুষ এই দিনে

সাধারণত ২২শে এপ্রিল আর্থ ডে উপলক্ষে মানুষ নানারকম উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করে থাকে। এই ধরনের কাজ কেউ কেউ একা করে , কেউবা আবার সম্মিলিতভাবে করে থাকে। সাধারণ কিছু কাজকর্মের মধ্যে গাছ লাগানো, রাস্তার ময়লা তুলে ডাস্টবিনে ফেলে আসা, কখনো কখনো রাস্তা পরিষ্কার করা, অব্যবহৃত জিনিস থেকে পুনরায় ব্যবহারের জন্য জিনিস বানানো ইত্যাদি কাজ করে থাকে। কেউ কেউ আবার জনসাধারণের সাক্ষর একত্র করে পিটিশন বানিয়ে সরকারকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং রোধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলে। এছাড়াও পরিবেশ রক্ষায় নানারকম কর্মসূচির আয়োজন করে।

এই দিনটিতে শিশুকিশোর, বৃদ্ধ-বণিতা সবার একটাই শপথ এই বিশ্বকে কিছু দেয়া। এর উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। অনেকেই এই দিনে সভা-সেমিনার করে, র্যা লি বের করে, মার্চ করে, বিশ্বের পরিবেশগত সমস্যার সমাধানে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে। কেউ রোড শো করে যা রাস্তা নাটক হিসেবে পরিচিত, কেউ বা ডকুমেন্টারি বানায় সাধারণ মানুষদের সঠিক জিনিসটি বোঝানোর জন্য এবং উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করে।

এটি কোন ছুটির দিন নয়। এই বিশ্ব দিবসটা কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য কোন ছুটির দিন বরাদ্দ করে না, না এটা কোন আনন্দ-উপভোগ করে কাটাবার সময়। এই দিনটি আসে এটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য যে আমরা নানাভাবে এই পৃথিবীর কাছে ঋণী এবং এই ঋণ শোধের জন্য আমাদেরও পৃথিবীর কাছে দায় রয়েছে।

এই একটা দিনে পৃথিবীর কোনায় কোনায় বিভিন্ন ধর্মের, বিভিন্ন গোত্রের, বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোক এক লক্ষ্যে একই কাজ করে, একই শপথ নেয় যে- এই পৃথিবীটা আমাদের, একে বাঁচিয়েও রাখতে হবে আমাদের জন্য, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এবং বাঁচাতে হবে আমাদেরই হাত থেকে। অন্তত এই একটা দিন আমরা নিজেদের এই পৃথিবীটার জন্য কিছু করি... পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগাই, রিসাইক্লিং করি, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের হাত থেকে মুক্ত করি বিশ্বকে। নিজেকে ঋণমুক্ত করার এর চেয়ে ভালো উপায় আর কি-ই বা হতে পারে!

পৃথিবী দিবস!

প্রতিদিন একজন মানুষ ৩২৯৭ টাকার অক্সিজেন ব্যবহার করেন। বছরে তার পরিমান দাঁড়ায় ১২ লক্ষ ৩ হাজার ৪শ ৫ টাকা। যদি ৬৫ বছর বাঁচি তাহলে অক্সিজেন বাবদ আমাদের খরচ দাঁড়ায় ৭ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। এত টাকার অক্সিজেনের সবটুকুই বিনামূল্যে পাচ্ছি আমাদের চারপাশের গাছ পালা থেকে। আমাদের অনেকেই জীবনের সাথে গাছের ভূমিকাকে বেমালুম ভুলে যান এবং গাছ কেটে পৃথিবীকে ধ্বাংসের মুখে ফেলে দিচ্ছেন।

আসুন গাছ লাগাই পৃথিবী বাঁচাই।