এর আকার এবং বৈচিত্র্যের দ্বারা, এশিয়ার ধারণা – একটি নাম ধ্রুপদি সভ্যতায় পাওয়া যায় - আসলে ভৌত ভূগোলের চেয়ে মানবীয় ভূগোলের সাথে আরো বেশি সম্পর্কিত। এশিয়ার অঞ্চল জুড়ে জাতিগোষ্ঠী, সংস্কৃতি, পরিবেশ, অর্থনীতি, ঐতিহাসিক বন্ধন এবং সরকার ব্যবস্থার মাঝে ব্যাপকভাবে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
ভূগোল ও জলবায়ু
এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ। এটা পৃথিবীর মোট ভূপৃষ্ঠের ৮.৮% ভাগ (বা ৩০% ভাগ স্থল), এবং বৃহত্তম তটরেখা ৬২,৮০০ কিলোমিটার (৩৯,০২২ মা)। এশিয়া সাধারণত ইউরেশিয়ার পাঁচ ভাগের চার ভাগ নিয়ে পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটা সুয়েজ খাল ও ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, ককেশাস পর্বতমালা, কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে অবস্থিত। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। এশিয়া মহাদেশে ৪৮টি দেশ আছে, তাদের দুটি (রাশিয়া ও তুরস্ক) দেশের ইউরোপে অংশ আছে।
এশিয়ার অত্যন্ত বিচিত্র জলবায়ু এবং ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য আছে। জলবায়ুর পরিধি আর্কটিক, উপআর্কটিক (সাইবেরিয়া) থেকে দক্ষিণ ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্রান্তীয় অবধি বিস্তৃত। এর দক্ষিণ-পূর্ব অংশ জুড়ে আর্দ্র ও অভ্যন্তরে শুষ্ক। পশ্চিম এশিয়ায় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দৈনিক তাপমাত্রা পরিসর দেখা যায়।হিমালয় পর্বমালার কারণে মৌসুমি সঞ্চালন দক্ষিণ ও পূর্ব অংশ জুড়ে প্রাধান্য পায়। মহাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ উষ্ণ। উত্তর গোলার্ধের মধ্যে সাইবেরিয়া অন্যতম শীতলতম অঞ্চল, এবং উত্তর আমেরিকা জন্য আর্কটিক বায়ুভরের একটি উৎস হিসাবে কাজ করে। ট্রপিকাল সাইক্লোনের জন্য পৃথিবীতে সবচেয়ে সক্রিয় জায়গা উত্তরপূর্বে ফিলিপাইন ও দক্ষিণ জাপান। মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি ও আরব মরুভূমি মধ্যপ্রাচ্যের অনেকটা জুড়ে প্রসারিত। চীনের ইয়ানজে নদী মহাদেশের দীর্ঘতম নদী। নেপাল ও চীনের মধ্যকার হিমালয় পর্বতমালা বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা পর্বতশ্রেণী। বৃষ্টিপ্রধান ক্রান্তীয় বনাঞ্চল দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে প্রসারিত ও সরলবর্গীয়, পর্ণমোচী বনাঞ্চল উত্তরে প্রসারিত।
পর্যটন
মাস্টারকার্ড বৈশ্বিক গন্তব্য শহর সূচক ২০১৩ প্রকাশ করে, যেকানে ২০টি শহরের মধ্যে ১০টি এশিয়ার এবং এশিয়ার কোনো শহর (ব্যাংকক) শীর্ষস্থানীয় অবস্থায় ছিলো, ১৫.৯৮ আন্তর্জাতিক পর্যটক নিয়ে।জনমিতি
স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আয় তথ্য প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পূর্ব এশিয়া সার্বিক মানব উন্নয়ন সূচকে (এইচডিআই) পৃথিবীর যেকোন অঞ্চলের চেয়ে বেশি উন্নতি সাধন করে, যা গত ৪০ বছরে দ্বিগুণ হয়।
চীন, এইচডিআই উন্নতিতে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্জনকারী ১৯৭০ সাল থেকে, "টপ টেন মুভার্স" তালিকার একমাত্র দেশ যা স্বাস্থ্য বা শিক্ষার সফলতা জন্য নয় আয়ের কারণে। শেষ চার দশকে এর মাথাপিছু আয় অত্যাশ্চর্য ২১ গুণ বেড়ে, লক্ষ লক্ষ মানুষের আয়ের দারিদ্যতা থেকে মুক্তি দেয়। তবুও এটা স্কুল তালিকাভুক্তি এবং প্রত্যাশিত আয়ুতে অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় নয়।
নেপাল, একটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ, প্রধানত কারণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বের দ্রুততম অগ্রসরমান। এর বর্তমান প্রত্যাশিত আয়ু ১৯৭০ সালের তুলনায় ২৫ বছর বেশি। নেপালে প্রতি পাঁচ জন শিশুদের মধ্যে চার জনের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়, যা ৪০ বছর আগে ১ জন ছিলো।
জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া মানব উন্নয়ন সূচকে সর্বোত্তম (১১ ও ১২ নং, যা "খুব উচ্চ মানব উন্নয়ন" বিভাগে পড়ে), অনুসরণ করে হংকং (২১) ও সিঙ্গাপুর (২১)। আফগানিস্তান (১৫৫) মূল্যায়ন ১৬৯টি দেশ থেকে, যা এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন স্থান।ভাষাসমূহ
এশিয়া বিভিন্ন ভাষা পরিবার এবং বিচ্ছিন্ন ভাষার আবাস। বেশিরভাগ এশিয়ার দেশগুলোতে স্থানীয়ভাবে একাধিক ভাষায় কথা বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ এথ্নোলগ অনুযায়ী, ৬০০-র অধিক ভাষা ইন্দোনেশিয়ায়, ও ৮০০-র অধিক ভাষা ভারতে প্রচলিত। এবং ১০০-এর বেশি ফিলিপাইনে প্রচলিত। চীন বিভিন্ন প্রদেশে অনেক ভাষা এবং উপভাষা রয়েছে।
ধর্ম
বিশ্বের অনেক প্রধান ধর্মের উত্স এশিয়ায়। এশীয় পুরাণ জটিল এবং বিচিত্র। উদাহরণস্বরূপ মহাপ্লাবনের ঘটনা, খ্রিস্টানদের ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত, যা মেসপোটেমিয় পুরাণের প্রথম নিদর্শন। হিন্দু পুরাণে বলা আছে, অবতার বিষ্ণু মাছের বেশে মনুকে একটি ভয়ানক বন্যা সম্পর্কে সতর্ক করে।
প্রাচীন চীনা পুরাণে, শান হ্যায় জিং, চীনা শাসক দা ইউ ১০ বছর
অতিবাহিত করে মহাপ্লাবন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, যা প্রাচীন চীনের বেশির ভাগ
অঞ্চল প্লাবিত করেছিলো। নুয়া দেবীর সহায়তায় আক্ষরিকভাবেই ভাঙা আকাশ ঠিক
করে।
এশিয়া
আয়তন | ৪,৪৫,৭৯,০০০ কিমি২ (১,৭২,১২,০০০ মা২) |
---|---|
জনসংখ্যা | ৪,১৬৪,২৫২,০০০ |
জনঘনত্ব | ৮৭/কিমি২ (২২৫/বর্গ মাইল) |
অধিবাসীদের নাম | এশিয়ান |
দেশসমূহ | ৪৯ (এবং অমীমাংশিত ৫) |
তথ্যসূত্র: https://bn.wikipedia.org/wiki/এশিয়া
No comments:
Post a Comment