Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Saturday 11 July 2020

কালবৈশাখী (Norwesters)

            কাল’ শব্দটির অর্থ ধ্বংস এবং মূলত বৈশাখ মাসে উৎপত্তি হয় বলে একে কালবৈশাখী নামে অভিহিত করা হয় ।

            কালবৈশাখী একটি স্থানীয় বৃষ্টিপাত ও বজ্রঝড় যা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলে হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতে মার্চ থেকে কালবৈশাখী ঝড় দেখা যায়। অনেকসময় এই ঝড় জীবনঘাতি রূপ ধারণ করে। গ্রীষ্ম ঋতুর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এ ঝড়ের আগমন ঘটে। কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিমি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিমি-এর বেশিও হতে পারে। কালবৈশাখীর স্থায়িত্বকাল স্বল্পতর, তবে কখনও কখনও এ ঝড় এক ঘণ্টারও বেশিকাল স্থায়ী হয়।  কালবৈশাখীর সময়ে যেকোন প্রকার বায়ুজান চালানো বিপদজনক। বিমানচালকেরা কালবৈশাখী ঝড়কে এড়িয়ে চলে। যদিও কালবৈশাখীর সময়কার বৃষ্টিপাত বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার ধান, পাট এবং আসামের চা চাষের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে।

সংঞ্জা: গ্রীষ্মকালে অর্থাৎ মূলত এপ্রিল – মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে মাঝে মাঝে বিকালের দিকে বজ্রবিদ্যুৎসহ যে প্রচন্ড ঝড়-ঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয়, তাকে কালবৈশাখী (Kalboishakhi) বলে ।

 বৈশিষ্ট্য :
1) বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝোড়ো আঞ্চলিক বায়ুপ্রবাহ ঘটে।
2) সাধারণত মার্চ মাসে দেখা যায়।
3) স্থিতিকাল ১-২ মাস
4) এপ্রিল মাসের পর এর বিলুপ্তি ঘটে।
5) প্রভাবিত অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা  ৫°C – ১০°C হ্রাস পায়
6) ঘূর্ণিঝড় এর গতিবেগ মোটামুটি ৮০ – ১০০ কিমি / ঘণ্টা।
7) ঘূর্ণিঝড় প্রাদুর্ভাবের স্থিতিকাল ৩০-৪০ মিনিট হয়ে থাকে।
8) বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ
১৫০ কিমি / ঘণ্টা।
9) মাঝে মাঝে শিলাবৃষ্টি হয়।10) হালকা থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাত হয়।
11) প্রভাবাধীন অঞ্চলে গাছপালা, বাড়িঘর প্রভৃতি ভেঙে পড়ে প্রাণহানিসহ প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়।

প্রভাবিত অঞ্চল:
            মূলত পশ্চিমবঙ্গসহ বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড, অসমের অঞ্চলবিশেষ ও বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কালবৈশাখী দ্বারা প্রভাবিত হয়।

 নামকরণ :
            কাল শব্দের অর্থ ধ্বংস এবং বৈশাখ মাসে উৎপত্তি হয় বলে একে কালবৈশাখী নামে অভিহিত করা হয়। গ্রীষ্মকালে বা এপ্রিল – মে মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলে মাঝে মধ্যে বিকালের দিকে বজ্রবিদ্যুৎসহ যে প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি হয় তাকে কালবৈশাখী বলে। কালবৈশাখী ঝড় উত্তর – পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে ইংরেজিতে নরওয়েস্টার (Norwester) বলা হয়।

 কালবৈশাখীর কারণ:
            এই অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠস্থ অত্যধিক গরম হলে বাতাস হালকা ও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। উত্তপ্ত হালকা বাতাস সোজা উপরে উঠে শীতল হয়ে কিউমুলাস মেঘ সৃষ্টি করে। বায়ুমন্ডলের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে কিউমুলাস মেঘ উল্লম্বভাবে কিউমুলোনিম্বাস নামক কালো মেঘ গঠন করে এবং পরবর্তী সময়ে বজ্রঝড়ের সৃষ্টি করে। সাধারণ ঝড়ের সংগে এই ঝড়ের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে এ ঝড়ের সঙ্গে সবসময়ই বিদ্যুৎ চমকায় ও বজ্রপাত হয়।

 কালবৈশাখীর জীবনচক্র :
            কালবৈশাখীর জীবনচক্রকে তিনটি ধাপে ভাগ করা যায়। ধাপগুলি ঊর্ধগামী অথবা নিম্নগামী বায়ুস্রোতের মাত্রা এবং গতিবিধি দ্বারা নির্ণীত হয়ে থাকে। কালবৈশাখীর পর্যায়গুলি হচ্ছে:

1) কিউমুলাস বা ঘনীপূঞ্জীভবন পর্যায়,
2) পূর্ণতা পর্যায় এবং
3) বিচ্ছুরণ পর্যায়।

            একটি কালবৈশাখী পূর্ণতা লাভের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর এর তীব্রতা হ্রাস পেতে শুরু করে বিচ্ছুরণ পর্যায়ে প্রবেশ করে। অতি দ্রুত হারে তাপমাত্রা হ্রাস, মেঘে প্রচুর জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি এবং বায়ুর পুঞ্জীভূত ঊর্ধ্বচলনের দরুণ কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে, শিলাবৃষ্টি অতিরিক্ত হলে ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে।

*****************************************
তথ্যসূত্র:
1. https://www.anandabazar.com
2. www.eisamay.indiatimes.com
3. https://bn.m.wikipedia.org

লেখক:
অয়ন বিশ্বাস
বি.এসসি, এম.এ(ভূগোল), বি. এড্
ঘোড়ালিয়া, শান্তিপুর, নদিয়া।


© GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) # Ghoralia, Santipur, Nadia, Pin- 741404.
.........................................................................................................
লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া সমগ্র বা আংশিক অংশ প্রতিলিপি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোন তথ্যের সমগ্র আংশিক ব্যবহার মুদ্রণ বা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (জিংক, টেক, স্ক্যান, পিডিএফ ইত্যাদি) পুনরুৎপাদন করা নিষিদ্ধ। এই শর্ত লঙ্খন করা হলে আইনের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

No comments:

Post a Comment