Welcome to GEO HUB (Enhance Your Geo Knowledge) Ghoralia, Santipur, Nadia, West Bengal-741404, Mobile: 8926495022 email: geohubghoralia@gmail.com

Diable copy paste

Monday, 28 April 2025

নদিয়ার একজন বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ : রামরুদ্র

 যারা সত্যিই অবাক হচ্ছেন যে তা কি করে সম্ভব ? শ্রদ্ধার সাথে একবার বলে রাখা ভালো যে ― এটিও একটি ইতিহাস লিখিত প্রমান থেকে উদ্ধৃত হয়েছে । আমরা ভারতীয় সভ্যতার অনেক কিছুই জানি না । ইতিহাসের অনেক পন্ডিত ব্যাক্তিত্ব কে ভালোভাবে জানি না বা আমরা ভুলে গেছি । তারা ছিলেন সেযুগে এক একজন বিদগ্ধ পন্ডিত, এক এক গুনে পারদর্শী । আপনি এটিও জানলে অবাক হবেন - এই 'রামরুদ্র' তিনি কিন্তু শুধু নদিয়ার রাজদরবারে জ্যোতির্বিদ ছিলেন তা কিন্তু নয়। তার গুরুত্ব এতটাই ছিল যে তিনি একই সাথে আরো একটি রাজধানীর জ্যোতির্বিদ ছিলেন। তা আমরা পরবর্তী পোস্টে আলোচনা করবো ।


তথ্যসূত্র :

ক্ষিতীশ-বংশাবলি-চরিত

আনন্দবাজার পত্রিকা

জাগো বাংলা পত্রিকা




বৃহস্পতিবার কুষ্মাণ্ড ভক্ষণ পাঁজিতে নিষিদ্ধ কি না তা নিয়ে ভারি মজার গল্প আছে সুকুমার রায়ের লক্ষ্মণের শক্তিশেল-এ৷ বাঙালির পাঁজি-নির্ভরতা নিয়ে এলিট সমাজের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও কম নয়৷ কিন্তু নববর্ষ যতই নিউ ইয়ারের কাছে কোণঠাসা হোক, বঙ্গজীবনে পাঁজি মোটেই হেজিপেঁজি নয়৷


সত্যি বললে, বিয়ে-মুখেভাত থেকে সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি, আম বাঙালির জীবনযাত্রা এই একুশ শতকেও অনেকটাই পাঁজি আঁকড়ে আছে৷ পাঁজি বা পঞ্জিকা কথাটা আসলে এসেছে পঞ্চাঙ্গ থেকে৷ বার, তিথি, নক্ষত্র, যোগ আর করণ— এই পাঁচ অঙ্গ থাকে বলে পাঁজির ভাল নাম পঞ্চাঙ্গ৷ বাংলাদেশে পঞ্জিকা গণনার ইতিহাস খুঁজলে নবদ্বীপের নাম পাওয়া যাবে প্রথমেই৷ রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময়ে রামরুদ্র বিদ্যানিধি পঞ্জিকা গণনা করতেন৷ তার পরে ইংরেজ আমলে কৃষ্ণনগরের কালেক্টরের চেষ্টায় বিশ্বম্ভর জ্যোতিষার্ণব পঞ্জিকা তৈরি চালিয়ে যান৷ এই সব পঞ্জিকা লেখা হত পুথির আকারে, অনুলিপি করা হত অনেকগুলি৷ ১৮৬৯-এ তা প্রথম ছাপা হয়, যা এখন বিখ্যাত ‘গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা’৷ ১৮৯১ থেকে প্রকাশিত হতে থাকে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা৷


‘মঙ্গলে ঊষা বুধে পা,যথা ইচ্ছা তথা যা।’

প্রথমে স্মরণ করি খনার বচনঅতঃপর পঞ্জিকা পাঠে দিই মন।সংক্ষেপে এই হল আবহমান বাংলা ও বাঙালির দীর্ঘলালিত অভ্যাস। বারো মাসে তেরো পার্বণ নিয়ে মেতে থাকা উৎসবপ্রিয় বাঙালি। অবশ্য বারবেলা, কালবেলা, শুভাশুভ, কালরাত্রি, রাহু-কেতু, অমৃতযোগ, শুভদিন, শুভক্ষণ, ভ্রষ্টলগ্ন, শুভলগ্ন ইত্যাদি প্রভৃতি নিয়ে মাথাব্যথা শুধু কি বাঙালির?রকেট উৎক্ষেপণ থেকে চন্দ্রাভিযান অথবা মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধান থেকে শুরু করে মহাকাশের নির্দিষ্ট কোনও এলাকা প্রদক্ষিণের প্রাক্কালে দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের একটা বড় অংশ কি আজও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন না অভিযান তথা অনুষ্ঠানের শুভসূচনা নিয়ে? পঞ্জিকা ঘেঁটে শুভদিন ও শুভলগ্ন বাছাই করে চিরাচরিত প্রথায় নারকেল ফাটিয়ে হোমযজ্ঞ সমেত সাফল্য কামনার রীতি থেকে আজও বেরোতে পেরেছে কি একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক ভারতবর্ষ? দেশের যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের সূচনায় আদি সংস্কারের হাতে হাত রাখছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এ তো খুবই চেনা ছবি।


তবে হ্যাঁ, দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে গৃহপ্রবেশ, মুখেভাত, পৈতে, সাধভক্ষণ, গায়ে হলুদ হয়ে একেবারে বিবাহ পর্যন্ত শুভক্ষণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পঞ্জিকা ছাড়া বাঙালির চলে না। আজকের এই তথাকথিত আল্ট্রা মডার্ন যুগেও মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের শুভসূচনায় পাঁজি ছাড়া গতি নেই বাঙালির। যতই আধুনিকতার বড়াই করা হোক না কেন, বাঙালি জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য অংশ পঞ্জিকা। লগ্ন, তিথি, অমৃতযোগ, রাশিফল, মলমাস, কখন কী কী নিষিদ্ধ, উচিত-অনুচিত, ভাল-মন্দ ইত্যাদি জানতে পাঁজির শরণাপন্ন হতেই হয়। প্রতিদিনের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান, চন্দ্রোদয়, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত, সময়-অসময়, জোয়ার-ভাটা— সবই লেখা থাকে পাঁজির পাতায়। একাদশী ও অম্বুবাচী জেগে থাকে জীবনকে ভালবেসে।‘পঞ্চাঙ্গ’ শব্দ থেকে এসেছে ‘পঞ্জিকা’। বার, তিথি, নক্ষত্র, করণ ও যোগ— এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমষ্টি হল ‘পঞ্জিকা’। নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতা ও কৃত্রিম আলোর ছটায় গুলিয়ে যায় অমাবস্যা ও পূর্ণিমা। তখন সঠিক পথ দেখায় পাঁজি। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁজিকে বলা হয় ‘পঞ্চঙ্গম’। পঞ্জিকার বিভিন্ন প্রকার আছে।


ইতিহাস অনুযায়ী, বাংলায় প্রথম পঞ্জিকার প্রচলন করেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা রঘুনন্দন। এই ব্রাহ্মণ ছিলেন সেকালে খ্যাতনামা পণ্ডিত। শুভাশুভের সন্ধানে মানুষ দ্বারস্থ হতেন এই ব্যক্তির। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর গণনায় কিছু ভুলত্রুটি পাওয়া যায়। তখন নবদ্বীপের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রামচন্দ্র বিদ্যানিধিকে দায়িত্ব দেন বাংলা পঞ্জিকা প্রকাশের।

রামচন্দ্র (মতান্তরে রামরুদ্র) বিদ্যানিধির উপর এই দায়িত্ব অর্পণ করেন কৃষ্ণচন্দ্র। ১৮১৮ সালে প্রথম বাংলা হরফে ছাপা পাঁজিকা প্রকাশিত হয়। জোড়াসাঁকোর জনৈক দুর্গাপ্রসাদ বিদ্যাভূষণ ছিলেন পাঁজির সংকলক এবং প্রকাশক ছিলেন রামহরি। ১৩৫ পাতার এই পাঁজিটি জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে।


No comments:

Post a Comment